জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়া কতটা ভুল ছিল কতটা সঠিক ছিল তা নিয়ে সিপিএমের অন্দরে নানা চর্চা হয়। শুধু সিপিএমের অন্দরেই নয়, বাংলার রাজনীতিতে এই ধরনের চর্চা চিরকালীন। তবে এবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে গৃহীত সর্বশেষ দলিলে নাম না করে ১৯৯৬ সালে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে জানিয়ে দিয়েছে সিপিএম। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পার্টিতে যে খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল সেটা তখন ঠিকই ছিল।
উল্লেখ করা হয়েছে পার্টির মধ্য়ে সংসদীয় মোহ বিরাজ করছে। যা দলের রাজনৈতিক রণকৌশলগত লাইনকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি পড়ছে পার্টি ও তার কর্মীদের উপর।
এদিকে একটা সময় পার্টির এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ভুল বলে উল্লেখ করেছিলেন খোদ জ্যোতি বসু। আর জ্যোতি বসুর সেই ঐতিহাসিক ভুলের তত্ত্বকে খারিজ করে দিল সিপিএম। বলা ভালো এখনকার সিপিএম। প্রসঙ্গত ১৯৯৬ সালে লোকসভা ভোটের পরে বিজেপিকে আটকাতে অকংগ্রেসি দলগুলির সর্বসম্মত প্রস্তাব ছিল জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করা হোক। সেই সময় জ্যোতি বসু ছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। তবে সেই সময় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি ভোটাভুটি করেছিল আর তাতেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। আর এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ভুল বলে আখ্য়া দিয়েছিলেন খোদ জ্যোতি বসুই। কিন্তু বর্তমান পার্টি অবশ্য তেমনটা মনে করে না। কার্যত পার্টির দলিলে খারিজ করা হল সেই ঐতিহাসিক ভুলের তত্ত্ব। অর্থাৎ অনেকের মতে অঙ্কটা এমন দাঁড়ায় যে সেই সময় পার্টি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেটা ঠিকই ছিল।
অনেকেই সেই সময় ভেবেছিলেন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। এরপর পার্টির বিভিন্ন মহলে এনিয়ে কাটাছেঁড়া কম কিছু হয়নি। তবে এবার আবার জ্যোতি বসুর সেই ঐতিহাসিক ভুলের সঙ্গে একমত নয় এখনকার সিপিএম।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, সিপিএমের অন্দরে মাঝেমধ্য়েই নানা রকম তত্ত্বকে হাজির করা হয়। কখনও বলা হয় সেটাই সঠিক। একেবারে একগুঁয়ে অবস্থান নেয় সিপিএম। আবার বেশ কয়েক বছর যাওয়ার পরে সিপিএমের হুঁশ ফেরে। তখন সিপিএমের মনে হয় আগের যে সিদ্ধান্ত ছিল সেটা ভুল ছিল। আসলে ওটা করা উচিত হয়নি। আবার কয়েক বছর পরে সিপিএমের অন্দরে বিপরীত ভাবনা আসবে কি না তা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে থাকে বঙ্গবাসী।