তিন বছর আগে কালীঘাট মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত সিকিভাগ কাজও হয়নি। এমনই অভিযোগ তুললেন মন্দিরের সেবায়তদের একাংশ। পুরভোটের আগে এমন অভিযোগে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল।
মন্দিরের সেবায়েত কাউন্সিলের একাংশের অভিযোগ, ১৮ মাসের মধ্যে মন্দির সৌন্দর্যায়নের জন্য পরিকাঠামো শেষ করার চুক্তি থাকলেও শুধুমাত্র ১০ শতাংশ কাজই হয়েছে। এই চুক্তি হয়েছিল কলকাতা পুরসভার সঙ্গে মন্দির কমিটির। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে কালীঘাট মন্দির সৌন্দর্যায়ন করা হবে। নতুন অতিথিশালা, আলো, রাস্তার পাশাপাশি পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। এ নিয়ে নকশা অনুমোদিত হয়েছিল ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। পুরসভার আধিকারিক এবং মন্দির কমিটির বৈঠকে সেই নকশা অনুমোদিত হয়। তারপরে মন্দির সৌন্দর্যায়নের জন্য আশেপাশের বেশ কিছু নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়। খোঁড়া হয় আশেপাশের রাস্তা। এখন সেখানে কার্যত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যেখানে সেখানে পড়ে আছে ইট বালির স্তূপ। তাছাড়া রাস্তায় খোঁড়া বড় বড় গর্ত এখনও রয়েছে। এককথায় মন্দিরের ভিতরে অবস্থা অনেকটা জতুগৃহের মত।
সেবায়তদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মন্দিরের এই অবস্থার কারণে সম্ভব হচ্ছে না দূরত্ববিধি মেনে চলা। এর কারণ হিসেবে পুরসভাকে ধীর গতির কাজকেই দায়ী করেছেন সেবায়েতদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এই মন্দিরে নিয়মিত আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদেশিরাও এই মন্দিরে আসেন। শুধু তাই নয়, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা, বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী এবং সেলিব্রেটিরা এই মন্দিরে এসে থাকেন। সেক্ষেত্রে মন্দিরের এরকম অবস্থার ফলে দর্শনার্থীদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। সেবায়তদের অভিযোগ, সৌন্দর্যায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর মন্দির চত্বরে খোঁড়াখুঁড়ি করে শুধুমাত্র কয়েকটা পিলার বসানো ছাড়া আর কোনও রকমের কাজ হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, অর্থ বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে, তারপরেও কেন এত দেরি করা হচ্ছে এই কাজে?
যদিও এ বিষয়ে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, কালীঘাট মন্দিরে প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। সেই কারণেই সৌন্দর্যায়নের কাজে বাধা পাচ্ছে। তবে পুরসভার এই দাবিকে মানতে নারাজ সেবায়েত কাউন্সিল। মন্দিরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজে ঢিলেমিকে মেনে নিতে নারাজ তাঁরা। যদিও পুরসভার পক্ষ থেকে দ্রুত এই কাজ শেষ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।