দু'সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। তবে ভোট পরবর্তী হিংসার জন্য এখনও বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। আগামী ২১ জুন পর্যন্ত থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিভিন্ন স্কুল, কলেজেই থাকছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এরফলে পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে পড়ুয়াদের। তা নিয়ে আগে থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন শিক্ষকরা। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার ফলে স্কুল-কলেজগুলিতে বিদ্যুতের বিল দেখে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ শিক্ষকদের। কারণ কোথাও ৩০ হাজার আবার কোথাও ৪০ হাজার টাকারও বেশি বিদ্যুতের বিল এসেছে। এই অবস্থায় এত টাকা কীভাবে মেটানো হবে, তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার বিকল্প জায়গা খুঁজতে হবে’, দুপক্ষকে নির্দেশ হাইকোর্টের
কলকাতার বিভিন্ন স্কুল যেমন যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুল, যাদবপুরের এন কে পাল আদর্শ শিক্ষায়তন-সহ একাধিক স্কুলে এরকমই চড়া বিদ্যুতের বিল দেখে আঁতকে উঠেছেন শিক্ষকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুল-কলেজে থাকার ফলে এমনিতেই বিদ্যুতের বিল বেশি আসতে পারে বলে অনুমান করেছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। তবে এতটা বিল যে আসবে, তা তাঁরা ভাবতেও পারেননি। জানা যাচ্ছে, যোধপুর বয়েজ স্কুলে বিদ্যুতের বিল এসেছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, মে মাসের প্রথমের দিকে স্কুলে কেন্দ্র বাহিনী এসেছিল। মাসজুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্কুলে থাকার ফলে এত পরিমাণ বিল এসেছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, ক্লাসরুমগুলিতে কেন্দ্র বাহিনীর জওয়ানরা থাকার ফলে ২৪ ঘণ্টা আলো জ্বলেছে এবং সবকটি পাখা চলেছে। পাশাপাশি হ্যালোজেন আলোও জ্বালিয়ে রাখা হত। সেক্ষেত্রে স্কুলের তরফে অকারণে আলো না জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তা বন্ধ হয়নি।
আবার যাদবপুরের এন কে পাল আদর্শ শিক্ষায়তনে বিদ্যুতের বিল এসেছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার ফলেই এত পরিমাণ বিল এসেছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, সারাদিন রাত ২৪ ঘণ্টা ধরেই সবকটি আলো জ্বলেছে। তাছাড়া স্কুলের সবকটি পাখা চলার পাশাপাশি ৬০টিরও বেশি বড়-বড় স্ট্যান্ড ফ্যান সব সময় চলেছে। শুধু তাই নয়, জলের পাম্পও চলেছে সবসময়। সেই কারণে এত বিল এসেছে।
এই অবস্থায় শিক্ষকদের তরফে শিক্ষা দফতরকে বিল মেটানোর দাবি জানানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন সোসাইটি ফোর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসের তরফে শিক্ষা দফতরের কাছে বিদ্যুতের বিল মেটানোর দাবি জানানো হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, স্কুল পড়ুয়াদের কাছ থেকে বছরে বেতন নেওয়া হয় ২৪০ টাকা। ফলে কোনওভাবে স্কুলের তহবিল থেকে এত পরিমাণ বিল মেটানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে কলকাতার জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে জানানো হয়েছে স্কুলগুলিতে অতিরিক্ত বিল আসার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হবে।