সরকার চালাতে নাকি হিমসিম খাওয়ার মতো অবস্থা। এতটাই আর্থিক অনটন। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না বলে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করে রাজ্য়ের শাসকদল। তবে কলকাতা পুরসভার অন্দরে চা পানের খরচের বিল দেখে মনে হতে পারে বেশ রসেবসেই চলছে সরকার। কোথাও কোনও আর্থিক সংকট নেই এই সংসারে। মূলত পুরসভার একটি নির্দিষ্ট অফিসে চা খাওয়ার বিলের কথা শুনলে মনেই হবে না আর্থিক অনটনে চলছে এই রাজ্য়ের সরকার।
সূত্রের খবর, পুরসভার একটি নির্দিষ্ট অফিসের এক শীর্ষ কর্তার দফতরে চা ও স্ন্য়াক্সের মাসিক বিল শুনলে হতবাক হবেন আপনিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মাসিক চা ও স্ন্যাক্সের বিল হয়েছে মাসে ৩৫ হাজার। গোটা পুরসভার নয়। কেবলমাত্র একটি অফিসের শীর্ষকতার চা , বিস্কুটের বিল যদি এত হয়, তবে প্রশ্ন উঠছে পুরসভা চলবে কীভাবে?
সূত্রের খবর, তবে এই বিল প্রতি বছর ক্রমশ বাড়ছে। ২০১৫ সালে চা, জলখাবারের বিল সেভাবে ছিল না। মেরেকেটে মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল হত। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে চায়ের বিলও ততই বেড়েছে। ২০১৬ সালে সেই বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০০ টাকা। ২০১৭ সালে সেই বিল হয়ে যায় ১২ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে দুদফায় বিল করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বিল হয় ২০ হাজার টাকা। আর সবথেকে আশ্চর্যের ২০২১ সালে যখন করোনার দাপটে অফিস কাছারাতি লোকজন কম তখনও চায়ের বিল একেবারে হু হু করে বাড়ছে পুরসভায়। সেই সময় চায়ের বিল দাঁড়ায় ৩০ হাজার টাকা। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ওই অফিসে চায়ের বিল হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। সেটার অনুমোদনও মিলেছে।
এখানেই প্রশ্ন টানাটানির সংসারে এভাবে চায়ের বিল বৃদ্ধি করা কি আদৌ যুক্তিসংগত? তবে পুরসভার একাংশের দাবি, এটা আসলে ওই বিভাগে যারা আসেন তাদের আতিথেয়তার খরচও রয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন সাধারণ মানুষের করের টাকায় এই রাজকীয় আতিথেয়তা না করলেই তো হয়!
তবে একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই চা বিলাসিতার খবর চাউড় হতেই পুরসভায় ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়েছে। শুধু চা আর স্ন্যাক্স খেয়েই যদি পুরসভার এতটাকা উড়ে যায় তবে উন্নয়ন হবে কী করে? এদিকে বিরোধীরাও এনিয়ে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করা শুরু করেছেন। টানাটানির সংসারে এত টাকা চায়ের বিল হওয়া কি সম্ভব?