গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতার ঘাটে কুমিরের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পরেই এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঘাট তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে। যার ফলে আতঙ্কে গঙ্গাস্নানে নামতে ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এরপরেই কলকাতা রিভার ট্রাফিক পুলিশও নজরদারি চালাতে শুরু করে জোর কদমে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরেই বন বিভাগ স্পষ্ট করল যে প্রাণীটিকে কলকাতার গঙ্গায় দেখা গিয়েছে সেটি আসলে কুমির কি না।
আরও পড়ুন: কলকাতার গঙ্গায় কুমিরের আনাগোনা, আতঙ্কে ঘাটে নামছেন না মানুষজন, তদন্তে বন দফতর
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, যে কলকাতার আহেরীটোলা ঘাটে একটি কুমিরের মতো একটি প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে। বেশ কয়েকজন সেই প্রাণীটির ভিডিয়ো রেকর্ডিংও করছিলেন। পরে প্রাণীটি উধাও হয়ে যায়। তারপরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে গঙ্গায় যে প্রাণীটি দেখা গিয়েছিল সেটি আদৌও কুমির কিনা।
সাধারণত কুমির দেখা যায় সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ নদীতে। তবে গঙ্গাতেও বিভিন্ন সময়ে কুমির দেখা গিয়েছে। এর আগে ফারাক্কা, কালনা, নদিয়াতেও কুমির দেখা গিয়েছে। ফলে কলকাতার গঙ্গায় যে কুমির আসতে পারে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এই বিষয়টির ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ অনেকেই প্রতিদিন গঙ্গাস্নান করেন। তারপরেই নড়েচড়ে বসে রিভার ট্রাফিক পুলিশ এবং বনদফতর।
এ বিষয়ে বনদফতরের সচিব বিবেক কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, কলকাতার গঙ্গাতে কুমির আছে বলে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে হুগলির ভদ্রেশ্বর এবং কলকাতার আশেপাশে গঙ্গায় একটি ঘড়িয়ালকে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ওই প্রাণীটিও সম্ভবত ঘড়িয়াল। ওয়ার্ল্ড লাইফ বিভাগের রেঞ্জ অফিসারও সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যদিও ঘড়িয়ালের মানুষের উপর হামলা করার ঘটনা খুবই বিরল। সাধারণত এদের মুখ সরু হয়। তাই এরা মাছ খেয়ে থাকে। বৃহৎ কোনও প্রাণীকে শিকার করতে সচরাচর দেখা যায় না। এ বিষয়ে রিভার ট্রাফিক পুলিশ কয়েকদিন আগে মৎস্যজীবীদের কাছে জানতে পেরেছিল খিদিরপুরের কাছে গঙ্গায় কুমির দেখা গিয়েছিল। তারপরে বনদফতরকে খবর দেওয়া হয়। তারা নিশ্চিত করেছেন ওই প্রাণীটি ঘড়িয়াল। রাজ্য বনদফতরের ওয়াইল্ডলাইফ বিভাগের রেঞ্জ অফিসের মনোজ যশ জানিয়েছেন যে প্রাণীটিকে কলকাতার গঙ্গায় দেখা গিয়েছে সেটি কুমির নয়, সেটি আসলে একটি ঘড়িয়াল। ফলে তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।