মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকের পরেই রাজ্য জুড়ে দখলমুক্তি অভিযানে নেমেছে পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসন। জেলায় জেলায় দেখা গিয়েছে হকার উচ্ছেদের চিত্র। তবে সেই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি দাবি করেছেন, কোথাও কোনও হকার উচ্ছেদ করা হয়নি। একইসঙ্গে, তিনি জানান, হকারদের পরিচয়ের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হবে। রাজ্যে বেআইনি পার্কিং এবং দখলদারি সমস্যার সমাধান খুঁজতে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কমিটিতে রাজ্যের তিন মন্ত্রী ফিরহাদ, অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক রয়েছেন। শুক্রবার ফিরহাদ সেই কমিটিকে নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। তারপরেই তিনি একথা জানান।
আরও পড়ুন: বাংলায় বুলডোজার! ‘দিদিই কিছু ব্যবস্থা করবেন’, আশায় ব্যবসায়ীরা
এদিন বৈঠক শেষে ফিরহাদ বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা বৈঠক করেছি। আমরা একটি সমীক্ষা শুরু করেছি। গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে হাতিবাগান, নিউ মার্কেট সহ বিভিন্ন জয়গায় সমীক্ষা করা হবে। কোথায় হকাররা তা খতিয়ে দেখা হবে। একটা অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। সেই অ্যাপ হকারদের আধারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।’ এছাড়া হকারদের মালপত্র রাখার জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গড়িয়াহাট এবং বেহালায় সেই জায়গা পাওয়া গিয়েছে। অন্যান্য এলাকাতেও জায়গার খোঁজ করা হচ্ছে।
এছাড়াও গাড়ি পার্কিং নিয়ে তিনি জানান, এক মাস পর থেকেই ই-পোস মেশিনের মাধ্যমে পার্কিং ফি নেওয়া হবে। তাছাড়া পার্কিং কোথায় বিনামূল্যে এবং কোথায় চার্জ নেওয়া হবে সেবিষয়ে বোর্ড লাগানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একমাস পরে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। এরপরই তিনি বলেন, ‘আমরা কোথাও হকার উচ্ছেদ করেনি। পুলিশও কোথায় উচ্ছেদ করেনি। হকারদের জন্য যে পরিমাণ জায়গা ধার্য রয়েছে শুধু সেই পরিমাণ জায়গাতেই বসতে দেওয়া হচ্ছে। বেশি জায়গা দখল করে থাকলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেটা ভাঙা হয়েছে সেটা সরকারি জমিতে বেআইনিভাবে গড়া হয়েছে। ফুটপাত সরকারি জায়গায়। সেটা কারও নিজের সম্পত্তি নয়।’
তিনি আরও জানান, হকাররা যদি ডালা অন্য কাউকে বিক্রি করে দেয় তা মেনে নেওয়া হবে না। এছাড়াও, হকিং জোন, নো হকিং জোন এবং আংশিক হকিং জোনে ভাগ করে দেওয়া হবে এলাকা। ফিরহাদ জানান, হকারদের অ্যাপ আধার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কেউ ডালা বিক্রি করতে পারবে না।
ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করে ৩/৫ ফুট জায়গা রেখে বাকিটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য হকারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি জানান, আগামী সোমবার হকারদের ভেন্ডিং সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। তৎকালীন বাম সরকারকে দুষে ফিরহাদের দাবি, বাম আমলে সব একতরফা হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে।