আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মেয়ের দেহ ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার বাবা মা। কেন পুলিশ অতিতৎপর হয়ে মেয়ের দেহ দাহ করে দিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এমনকী পুলিশ তাঁকে মেয়ের শেষ কাজের টাকা টুকুও মেটাতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন হতভাগ্য বাবা। সেই দিন ঠিক কী ঘটেছিল তা নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআইও। এরই মধ্যে মুখ খুললেন সেদিন শববাহী গাড়ির চালক। জানালেন, পরিবার নয়, পুলিশই বুক করেছিল তাঁর গাড়ি।
আরও পড়ুন - মানুষের হাসপাতালে তৃণমূল নেতার কুকুরের চিকিৎসা! বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর
পড়তে থাকুন - 'এখনই প্রতিরোধ না হলে আরও অনেক তিলোত্তমাকে এভাবে চলে যেতে হতে পারে'
গত ৯ অগাস্ট সন্ধ্যায় আরজি করে নির্যাতিতার নিথর দেহ নিয়ে সোদপুরের এইচবি টাউনের বাড়িতে ও সেখান থেকে শ্মশানে পৌঁছেছিলেন শববাহী গাড়ির চালক অমিত ঘোষ। দীর্ঘদিন শববাহী গাড়িই চালান অমিতবাবু। ঘটনার প্রায় ১ মাস পর শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন তিনি।
অমিতবাবু বলেন, ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে ওই সময়ই রোজ মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশই। দেহ গাড়িতে তোলার পর প্রায় ৩০ মিনিট আমি অপেক্ষা করি। তার পর পুলিশের নির্দেশে ডাক্তারদের হস্টেলের সামনে দিয়ে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান পেরিয়ে গেট দিয়ে গাড়ি বার করি। তিনি বলেন, আমার গাড়ির সামনে ও পিছনে ২টো করে পুলিশের গাড়ি ছিল।
তিনি জানান, মর্গের সামনে আমার গাড়ির সামনে দিদির মা বাবার গাড়ি ছিল। পুলিশ ওই গাড়িটাকে সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ গাড়িটা না সরালে আমি গাড়ি বার করতে পারতাম না। শ্মশানে দেহ নিয়ে যাওয়ার পর সেখানেও প্রায় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করি। সেখানে প্রচুর পুলিশ ছিল। কাউন্সিলর ছিলেন। আমাকে ট্রলি ফেরত দিয়ে দেওয়ার পর আমি ভিড়ভাট্টা দেখে পয়সা না নিয়েই ফিরে আসছিলাম। তখন একজন পুলিশকর্মী দৌড়ে এসে আমার পাওনা মিটিয়ে দেন।
আরও পড়ুন - খুনি ডাক্তারের শাস্তি চাই, সন্ধের পর পথে নেমে স্লোগান তুললেন কল্যাণ
মেয়ের মৃত্যুর পর পুলিশের বিরুদ্ধে দেহ দখলের অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার বাবা মা। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, মেয়ের দেহ পুলিশের হাতে তুলে দিতে একটি কাগজে সই করার জন্য পুলিশ আমার ওপর চাপ তৈরি করে। আমার ভাগ্নে ওই কাগজে সই করতে বারণ করেছিল। কিন্তু পুলিশের চাপে শেষ পর্যন্ত ওই কাগজে সই করতে বাধ্য হই। আরজি কর মেডিক্যালের মর্গের প্রাক্তন কর্মী তারক চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাসপাতালের মর্গে শব সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত চেম্বার রয়েছে। তার পরেও দ্রুত শবদেহ সৎকারে পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, আমরা শব সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাড়ি ৩০০ – ৪০০ পুলিশ ঘিরে রেখেছিল। চাপের মুখে দেহ সৎকারে বাধ্য হই।