নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে এবার বিস্ফোরক তথ্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে। সূত্রের খবর, নবম-দশম শ্রেণিতে প্রতি চাকরিপিছু বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ ২০ লক্ষ টাকা করে তুলতেন। তবে সবটাই যে তিনি একাই খেয়ে নিতেন এমন নয়। সেই টাকা একেবারে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ভাগ যেত বিভিন্ন মহলে। কিন্তু ঠিক কারা কারা এই চাকরি চুরির টাকায় ভাগ পেতেন সেটাই জানার চেষ্টা করছেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এদিকে ধৃত অপর অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল আগেই সংবাদ মাধ্য়মের সামনে জানিয়েছিলেন, ১৯ কোটি টাকা গিয়েছে কুন্তলের কাছে। পরে ইডির জেরার মুখে তাপস মণ্ডল স্বীকার করে নিয়েছেন, সব মিলিয়ে ১৯ কোটি ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা তিনি কুন্তলকে দিয়েছিলেন। সেই বাবদ রসিদও পেয়েছিলেন তিনি।
এদিকে তদন্তে নেমে ইডি জানতে পেরেছে, চাকরিপিছু রেট ঠিক করতেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। আর নবন দশম শ্রেণিতে চাকরি পিছু দর উঠত ২০ লক্ষ টাকা করে। এখনও পর্যন্ত ৬জন কর্মপ্রার্থীকে ইডি চিহ্নিত করেছে। তাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০ লক্ষটাকা করে নিয়েছিলেন কুন্তল। তবে শুধু ওই ৬জন নয়, আরও প্রার্থীর কাছ থেকে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন ইডির আধিকারিকরা।
এদিকে একটি ডায়েরির সন্ধান পেয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। সেই ডায়েরিতে ৩০ কোটি টাকার হিসেব পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে এনিয়ে ইডির তরফে একাধিকবার কুন্তলকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। বারবার এই প্রসঙ্গে কথা এড়িয়ে গিয়েছেন।
কিন্তু একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা কুন্তল ঘোষ ধার হিসাবে দিয়েছেন। কখনও টলিউড অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত, কখনও আবার বিউটি পার্লারের মালিক সোমা চক্রবর্তীকে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু সেসব আবার ফেরৎ নেওয়ারও কোনও তদ্বির নেই। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে এত টাকা কুন্তল কোথা থেকে পেতেন? আর সেই টাকার হিসাব মেলাতে গিয়েই হতবাক ইডির গোয়েন্দারা। সেই সঙ্গেই ইতিমধ্যেই শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পাচ্ছেন ইডির গোয়েন্দারা। বলাগড়ের রিসর্ট, ধাবা, ফ্ল্যাট সব মিলিয়ে একেবারে রাজকীয় ব্যাপার। এখানেই প্রশ্ন কোথা থেকে আসত এত টাকা? কুন্তলের আয়ের উৎস নিয়েও ঠিক এই প্রশ্নটাই করেছেন বিচারপতি। হুগলিতে নাকি চাকরি বিক্রির অনুমোদিত ডিলারশিপ চালাতেন কুন্তল-শান্তনু। অভিযোগ এমনটাই।