নাকে স্প্রে দিলেই উবে যাবে করোনা! এই স্প্রে রুখে দেবে করোনার বংশবৃদ্ধি। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবেন করোনা রোগীরা। করোনা মহামারির অস্ত্র হিসেবে এবার দেশীয় পদ্ধতিতে ব্যবহার হতে চলেছে নাকের ড্রপ। এই নয়া ওষুধের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করা হবে শহরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের ১৫ জনের উপরে এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে বলে। সোমবার থেকে আম জনতার জন্য আবেদনের দরজা খুলে দিচ্ছে দক্ষিণ শহরতলির পিয়ারলেস হাসপাতাল। মোট ৩০ জনের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে। তবে মাত্র ১৫ জন এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সুযোগ পাবেন।
দেশের ১০টি শহরে ৩০৬ জন রোগীর উপর ওষুধটির তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে শীঘ্রই। এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পূর্ব ভারতের একমাত্র কেন্দ্র হিসেবে সামিল হয়েছে কলকাতার এই বেসরকারি হাসপাতাল। কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্রের পর গত বুধবারই পঞ্চসায়রের ওই বেসরকারি হাসপাতালের এথিক্স কমিটি স্প্রেটির ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে।
তবে এই নতুন স্প্রে নিয়ে অনেকেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অভয় দিয়ে জানিয়েছেন, এই স্প্রের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল হয়ে গিয়েছে। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রমাণ মিলেছে যে, এই স্প্রে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এমনকী, করোনা রোধ করতেও এর কার্যকারিতা প্রমাণ হয়েছে। এই স্প্রে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি আটকে দিতে সক্ষম।
এপ্রসঙ্গে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই স্প্রে নাকে দিলে মাত্র দু’দিনের মাথায় ৯২ শতাংশ ভাইরাল লোড কমছে। আর তিন দিনের মধ্যে ৯৯ শতাংশ ভাইরাল লোড কমছে। শুধু তাই নয়, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগীর নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, নির্বাচিত ১৫ জনকে প্ল্যাসেবো ও বাকি ১৫ জনকে ওই নাকের স্প্রে দেওয়া হবে। তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নির্বাচিত সদস্যরা কেউ জানতে পারবেন না যে, কাকে প্ল্যাসেবো দেওয়া হল আর কাকেই বা নাইট্রিক অক্সাইডের ওই স্প্রে। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই, যে ব্যক্তিরা ওই স্প্রেটি পাবেন না, তাঁদের করোনার আনুষঙ্গিক ওষুধ দেওয়া হবে। তাঁদের স্বাস্থ্যের যথাযথ খেয়াল রাখা হবে।
এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যুক্তরা জানাচ্ছেন, তবে আবেদনকারীদের একটাই শর্তে এই ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হবে। যাঁরা করোনা আক্রান্ত কিন্তু ভ্যাকসিন নেননি, এমন রোগীদের বেছে নেওয়া হবে। যদি কোনও আবেদনকারীর করোনার ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে, তাঁদের আবেদন নাকচ করা হবে। স্প্রে নেওয়ার পর করোনা আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নাইট্রিক অক্সাইড সমৃদ্ধ এই স্প্রে উচ্চ রক্তচাপে জীবনদায়ী ওষুধ হিসেবে বহু বছর আগে থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন করোনা রোধেও তার সুফল লক্ষ্য করা গিয়েছে।