কালীপুজো উপলক্ষ্যে কলকাতা এখন আলোর রোশনাইয়ে গা ভাসিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যাঁরা আবার নস্টালজিক হতে চান, তাঁদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ ট্রাম পরিবহন নিগম। শনিবার বিশ্বের প্রথম শিশু পাঠাগারসমেত ট্রামের উদ্বোধন করা হয়েছে। কারণ আজ শিশু দিবসও বটে। এই গোটা বিষযটির নাম রাখা হযেছে, ‘দ্য কলকাতা ইয়ং রাইডার্স ট্রামকার।’ পশ্চিমবঙ্গ ট্রাম পরিবহন নিগম এবং এপিজে আনন্দ চিলড্রেন্স লাইব্রেরির যৌথ উদ্যোগে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এখানে দুটি বিষয় একসঙ্গে হবে। এক, নতুন শিশু পাঠকদের আকর্ষণ করবে। দুই, শিশুদের নিয়ে মা–বাবা এখানে উঠবেন।ফলে কিছুক্ষণের জন্য তাঁরাও নস্টালজিক হয়ে পড়বেন। চলন্ত অবস্থায় বই পড়া একটা আলাদা আনন্দ বয়ে নিয়ে আসবে। আসলে এখন গল্পের বই পড়ার অভ্যাস নতুন প্রজন্মের নেই বললেই চলে। কারণ এখন স্মার্টফোন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সবই মিলে যাচ্ছে হাতের নাগালে। কিন্তু বইয়ের স্বাদ কী এভাবে ভার্চুয়ালি পাওয়া যায়? উঠছে প্রশ্ন।
এই প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে ইতিবাচক দিক হল এখানে শিশুদের জন্য থাকছে হাজার বই। কিন্তু কী করে এই ট্রাম মিলবে? এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনভীর সিং কাপুর বলেন, ‘এই ট্রাম ছাড়বে শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা এবং ধর্মতলা থেকে গড়িয়াহাট রুটে। রোজ এই ট্রাম সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিলবে।’ তাহলে ঘরবন্দি শিশুরা এখন ট্রামে উঠে মুক্তির স্বাদ পাবে। করোনার জেরে লকডাউন এবং ঘরে থেকে শিশুরাও হাঁফিয়ে উঠেছে। সেখান থেকে মিলবে মুক্তি।
এখানে শিশুদের কোনও ভাড়া লাগবে না। লাগবে না কন্যাশ্রী প্রকল্পে থাকা মেয়েদেরও। শুধু মা–বাবার ভাড়া লাগবে, তাও ট্রামের যে ন্যূনতম ভাড়া হয় সেটাই। সেপ্টেম্বরে যে ট্রাম উদ্বোধন হয়েছিল, সেখানে ছিল বিপুল পরিমাণ বই এবং পরীক্ষার্থীদের জন্য বইপত্র। চেক প্রজাতন্ত্রেও এমনটা দেখা যায়। কিন্তু চলন্ত ট্রেনে শিশু পাঠাগার এটা বিশ্বে প্রথম। গোটা ভারতের মধ্যে কলকাতায় একমাত্র ট্রামের অস্তিত্ব রয়েছে। ১৮৭৩ সালে প্রথম কলকাতায় ঘোড়ায় টানা ট্রাম চলে। তারপর ধাপে ধাপে হযেছে আধুনিকীকরণ। তবে শিশুদের জন্য আরও পরিকল্পনা নিয়ে আসা হচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী ট্রামে।