আরজি করে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল এক মহিলা চিকিৎসককে। আর তারপর সেমিনারে অভীক দে নামে এক পিজিটি ছিলেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছে। সেই অভীক সম্পর্কে এখন নানা রকম তথ্য় সামনে আসতে শুরু করেছে। চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ও আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ওই অভীক দের পিজিটি পাওয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
এদিকে প্রথম প্রশ্ন বাস্তবে ছবিতে থাকা ওই ব্যক্তি যদি অভীক দে হয়ে থাকেন তবে তিনি ওখানে কেন গিয়েছিলেন?
এদিকে সেই অভীক যে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ তা ইতিমধ্য়েই সামনে এসেছে। এবার দাবি করা হচ্ছে করোনা পর্বে গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা করলে বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে ভর্তির ক্ষেত্রে এই সার্ভিস কোটার সুযোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন অভীক। আর তার মাথায় হাত ছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তৎকালীন এক প্রভাবশালী কর্তার।
এমনকী তিনি বর্ধমান মেডিক্যালের রেডিওলজি বিভাগের আরএমও পদে ছিলেন। কিন্তু তিনি শংসাপত্রে বর্ধমান ২ ব্লকের বামচাঁদাইপুর গ্রামীণ এলাকায় অনাময় হাসপাতালে কর্মরত বলে দাবি করা হয়েছিল।
এদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি, অভীক উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। কিন্তু তার বাড়ি হল বর্ধমানে। আর তিনি সেই বাড়ির কাছেই আরএমও করার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু স্নাতকোত্তর না হয়ে তিনি কীভাবে আরএমও হওয়ার সুযোগ পেলেন? তবে এসব নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস ছিল অনেকেরই।
তবে এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে অভীকের এই অনিয়ম নিয়ে অবশ্য জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কাদের প্রশয়ের হাত ছিল অভীকের মাথার উপর? যার জেরে অভীক একের পর এক সুবিধা পেয়ে গেলেন। এমনকী বেতন তুললেন বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে। আর তিনি গ্রামীণ এলাকায় থাকা হাসপাতালে কর্মরত বলে দাবি করা হল। আবার গোটা কোভিড পর্বে সেই অভীককে দেখা গেল না অনাময়তে। সবটাই রহস্যময়।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেমিনার হলের সেই ছবিতে উপস্থিত ব্যক্তিদের কথা সামনে আনেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্য়ায়। এরপরই আসল বিতর্কের সূত্রপাত।
সেই ছবিতে পুলিশের পক্ষ থেকে লাল জামা পরা এক ব্যক্তিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ হিসাবে দেখানো হয়েছিল। তবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পালটা দাবি করা হয়েছে লাল জামা পরা ব্যক্তি কোনও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ নন। তিনি হলেন অভীক দে। এসএসকেএমের পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্র। কিন্তু তিনি যদি অভীক হন তবে ওখানে কী করছিলেন? পুলিশ তার সুস্পষ্ট ব্যাখা দিতে চাইছে না। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন লাল জামা পরা ওই ব্যক্তি।