জুনিয়র ডাক্তারদের কেউ বলছেন ডাকাত। কেউ আবার তাঁদের কর্মসূচিকে বলছেন শেয়ালের হুক্কাহুয়া। এবার সেই জুনিয়র ডাক্তারদের কার্যত মাওবাদীদের সঙ্গে তুলনা করলেন তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবাংশু বলেন, আমি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মাওবাদীদের সঙ্গে তফাৎ দেখছি না। একথা শুনে এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, তবে কি কাল মাওবাদীদের সঙ্গে মিটিং করবেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী?
কী বলেছেন দেবাংশু?
দেবাংশু জানিয়েছেন, আমি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও তফাত দেখছি না। মাওবাদীরা বলে আমরা মানুষ মারি প্রতিবাদের জন্য। জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন আমরা মঙ্গলবার থেকে চিকিৎসা বন্ধ রেখে মানুষ মারব। ডাক্তারদের এই হুমকির মানে কী? এর অর্থ হল আমাদের আবদার মানা না হলে আমরা মানুষ মারা শুরু করব। চিকিৎসা বন্ধ রাখা মানেই মানুষ মারা। মানুষ মারাকে যদি প্রতিবাদের অস্ত্র হিসাবে গ্রহণ করে তাহলে আমি জুনিয়র ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও তফাৎ দেখছি না।
দেবাংশু এখানেই থামেননি। তিনি আরও বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলন দেখে মনে হচ্ছে স্বাস্থ্য মাফিয়া, বেসরকারি নার্সিংহোমের মালিক ও চিকিৎসকরা জুনিয়র ডাক্তারদের শ্রীখন্ডী হিসাবে দাঁড় করিয়ে কলকাঠি নাড়ছে। কারণ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা যত ভেঙে পড়বে ততই বেসরকারি নার্সিংহোমগুলি ফুলে ফেঁপে উঠবে।
তবে দেবাংশুর এই মাওবাদী কটাক্ষের জবাব দিলেন জুনিয়র ডাক্তার ও সিনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন এসব মাওবাদী তকমা দিয়ে আখেরে কিছু হবে না।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কার্যত জুনিয়র ডাক্তারদের উপর কার আক্রমণের ধার কতটা বেশি তা নিয়ে কার্যত প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।
একের পর এক নেতা মন্ত্রী এনিয়ে আক্রমণ করা শুরু করেছেন।
এর আগে এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, ‘ওঁরা বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী একবার আসতে পারলেন না? জবাব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো ধরনা মঞ্চে গেছিলেন। জ্যোতিবাবুর মতো পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে তুলে দেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বাড়িতে বৈঠক করেছেন, নবান্নেও। আপনারা যখন যেখানে ইচ্ছে বসবেন, আর মুখ্যমন্ত্রীকে ততবার যেতে হবে?’
এর জবাবও দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
জুনিয়র ডাক্তার সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা বলেছিলেন, ‘আমরা গত ১৩ দিন ধরে(যখন তিনি বলেছিলেন) শুধু জল খেয়ে আছি। ওআরএসও খাচ্ছি না। শুধু জল। কথা বলতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কি একবারের জন্যও আমাদের কথা ভাবছেন না? আমরা দেখলাম, তিনি দুর্গাপুজোয় মেতে আছেন। কোথায় গেল ওঁর মাতৃসত্তা? আমাদের এখানে তো উনি একবারের জন্যও এলেন না। কেন উনি এত নিষ্ঠুর?’