গত কয়েক বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুরে বিভিন্ন রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তাই এই জেলায় আইনশৃঙ্খলা বজায় উপরে আরও বেশি জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার সুবিধার্থে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থানাকে ভেঙে ফেলে তিনটি আলাদা থানা এবং দুটি আউটপোস্ট তৈরি করা হয়েছে। আর এবার নজরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। নবান্ন সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরকে ভেঙে তিনটি পুলিশ জেলা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ পুলিশ জেলা হল ডায়মন্ড হারবার, শুভেচ্ছা জানালেন অভিষেক
আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার সুবিধার্থে এর আগে বিভিন্ন বড় জেলাকে ভেঙে একাধিক পুলিশ জেলা করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার আয়তন ৪ হাজার ৭৮৫ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে একজন পুলিশ সুপারের কাঁধেই এই জেলার দায়িত্ব রয়েছে। তবে রাজ্য সরকার মনে করছে, এত বড় জেলা একজন পুলিশ সুপারের পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। সেই কারণে পূর্ব মেদিনীপুরে তিনটি পুলিশ জেলা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। যদিও পুলিশ জেলা করতে গেলে অনেক আইনি জটিলতা রয়েছে। ফলে সেক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
শুধু পুলিশ জেলাই নয়, স্বাভাবিকভাবেই সাইবার ক্রাইম থানা এবং মহিলা থানার সংখ্যাও বাড়ানো হবে। প্রাথমিকভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের যে তিনটি এলাকাকে পুলিশ জেলা করা হবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল কাঁথি, হলদিয়া এবং তমলুক। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল কাঁথি মহকুমা, যার আয়তন ১২০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি।
৭টি ব্লক রয়েছে কাঁথি মহকুমায়। সেক্ষেত্রে এত বড় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে গেলে আলাদা পুলিশ জেলা প্রয়োজন বলে মনে করছে প্রশাসন। কাঁথি মহাকুমার মধ্যেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র- দিঘা মন্দারমণি, তাজপুরের মতো জায়গাগুলি। এখানে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক পর্যটক ঘুরতে আসেন। ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তা স্বার্থে সেখানে আলাদা পুলিশ জেলা করা প্রয়োজন।
আবার বন্দর নগরী হলদিয়াতেও খেজুরী এবং নন্দীগ্রামের মতো এলাকা রয়েছে। এই দুটি এলাকায় রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনাপূর্ণ। সেখানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পৃথক পুলিশ জেলা করতে হবে বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, জেলা সদর তমলুককে ঘিরেও আলাদা পুলিশ জেলা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।