ডিপ্লোমা ডাক্তারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন খোদ বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপর এনিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে একেবারে রে রে করে উঠেছেন বিরোধীরা। এভাবে কি ডিপ্লোমা ডাক্তার হতে পারে নাকি? একাধিক নামী চিকিৎসক এনিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলছেন।
তবে বাংলা সংবাদপত্র 'বর্তমানে' প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে বাম জমানাতে এই ধরনের ডিপ্লোমা ডাক্তার ছিলেন এই বাংলাতেই। এমনকী তাঁদের মধ্য়ে কয়েকজন এখনও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাও করছেন। আপনিও হয়তো তাঁদের কাছে চিকিৎসা করিয়েছেন।
বর্তমান সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ৮০-৮১-৮২ সালে সরকার অনুমোদিত সাড়ে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স হয়েছিল। বলা হত সিএইচএসও। তিন বছরে মোট ৩১১ জন পাশ করে বেরিয়েছিলেন। মূলত গ্রামীণ এলাকাতেই তাঁরা চিকিৎসা করেন। নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল জেনারেল সার্ভিস। এই নামেই পরিচিত তাঁরা। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে বহু রোগী তাঁরাই দেখেন। বেতনও পান। তবে পরে কয়েকজন আবার সাড়ে চার বছরের একটা কোর্স করে নেন। তাঁরা পরবর্তীতে অ্য়াডিশনাল মেডিক্যাল অফিসার পদ পেয়ে যান।
হাওড়ার কুলটি, শ্যামপুর, ক্য়ানিং, পুরুলিয়া, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামীণ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁরা দিব্যি রোগী দেখছেন।এমনকী বিএমওএইচের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও সামলেছেন এমন নজিরও রয়েছে।
এদিকে এই খবর সামনে আসার পরেই শোরগোল পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগেই কটাক্ষ করে বলেছিলেন, মানসিক অবস্থা ঠিক নেই ওনার। তিনি বলছেন সাত দিনে নাকি নার্স তৈরি করা যায়। এক দু বছরে ডাক্তার তৈরি করা যায়। লোকে এক দু লক্ষ টাকা খরচ করে ইউক্রেন, রাশিয়া পোল্যান্ডে পড়তে যাচ্ছেন কেন? মমতার স্কুলে ভর্তি হয়ে যান। যারা ফিরে এসেছিলেন ওখান থেকে, তাদের বলেছিলেন সব জায়গায় ভর্তি করে দেবেন। কতজনের কমপ্লিট হয়েছে। তার হিসাব দিন। কেবল মিথ্যা কথা বলে চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে ইতিমধ্যেই রাজ্য়ে ডাক্তারির ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা যায় কি না তা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে নানা চিন্তাভাবনা করছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই তবে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে সরকার। তবে অনেকের মতে ৮০' দশকে বাংলার চিকিৎসা ব্যবস্থা যেখানে দাঁড়িয়েছিল, বর্তমানে তার থেকে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানেরও উন্নতি হয়েছে। সেক্ষেত্রে এখন ডিপ্লোমা ডাক্তার তৈরি করে পেছন দিকে হাঁটার কী যুক্তি থাকতে পারে তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।