তাঁর দলের কিছু নেতা দলবদলের হুমকি দিচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার নবান্নে মেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে দুর্গাপুরের মেয়রের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আলোচনার সময় এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘যে যে যেতে চায় তাদের যেতে বলো।’
এদিন রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে যে অভিযোগ (গ্রিভান্স) জমা পড়েছে তার কতটা নিষ্পত্তি হয়েছে তার হিসাব নিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলে রাখি, এই ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে পুরস্কার পেয়েছে রাজ্য সরকার।
আলোচনার সময় দেখা যায় দুর্গাপুর পুরসভায় ৯৫ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি। এর পরই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে এর জবাব তলব করেন মমতা। ফিরহাদ বলেন, ‘দুর্গাপুরে এমন একটা অবস্থা হয়ে রয়েছে যে মেয়রই কোনও কাজ করে না দিদি’।
কাজ পাগল মমতা কাজ হচ্ছে না শুনে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। বলেন, ‘কাজ করে না তো চেঞ্জ করে দাও। দরকার হলে মিটিং ডাকো। ওখানে নির্বাচিত পুরবোর্ডের সদস্যরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে যা করার করবে। আমি নিজেও ওনাকে দু-তিন বার বলেছি। যদি কেউ কাজ না করে দায়িত্বে বসে থাকার তার কোনও প্রয়োজন নেই’।
দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অবস্থির উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আমি ওনার বয়সকে সম্মান করি। তিনি প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক। ভাল মানুষ। কিন্তু গুড ফর নাথিং হয়ে গেলে আমাকে দেখতে হবে’।
এর পরই দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এখন আবার নতুন টেকনিক হয়েছে। কাউকে কিছু বলতে গেলেই কেন কাজটা করছ না, বলছে অন্য পার্টিতে চলে যাব। যাক, যে যে যেতে চায় তাদের যেতে বলো’।
ফিরহাদ পালটা বলেন, ‘এর ক্ষেত্রে সমস্যা সেটা নয়। কিন্তু পারফরম্যান্স নেই’। মমতা বলেন, ‘পারফরম্যান্স নেই কেন, তিনি তো সরকারি আধিকারিক ছিলেন। উনি না পারলে যে পারবে তাকে দেও। লোকের কি অভাব আছে?’
এব্যাপারে দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অবস্থি বলেন, আমি এব্যাপারে কিছু জানি না। তাই কোনও কথা বলব না। বিজেপির দাবি, ‘তিন বছর ধরে দুর্গাপুরের মেয়র অকর্মণ্য বলে দাবি করছিল বিজেপি। আজ পুরমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী তা মেনে নিলেন।’