রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন তখন আজ দিল্লি গেলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং, সৌমিত্র খাঁ এবং নিশীথ প্রামানিক। মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এখানে বৈঠক হয়েছে। তারপরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দিল্লিতে বৈঠকে তলব করা হল এই তিন নেতাকে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই তিনজনই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এমন পরাজয়ের কারণ খুঁজতেই এই জরুরি তলব বলে সূত্রের খবর। তাছাড়া পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজ্যে কিভাবে এগোনো হবে তার রণকৌশলও ঠিক হতে পারে।
মঙ্গলবার কেন্দ্রের সমালোচনায় টুইট পাল্টা টুইট চলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র খাঁর মধ্যে। জবাব আসে শুভেন্দু অধিকারীরও। সেখানে সৌমিত্র খাঁ কটাক্ষ করে বলেন, ‘যাঁদের মেরুদণ্ড নেই তাঁরা চিন্তাভাবনা করবে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে গিয়ে কুকুরের মত থাকার। আমি এটাকে পছন্দ করি না।’ তবে বাকি তিন সাংসদকে কেন তলব করা হয়েছে? তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তিন সাংসদও এই ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেই খবর।
বিজেপি সূত্রে খবর, শুধু শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে ডেকে নেওয়া নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে যে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মিটিয়ে নিতে চাইছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসে ২০১৯–এর নির্বাচনে জয়লাভ করা তিন সাংসদকে দিল্লিতে তলব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। দিল্লিতে গিয়ে বাংলায় ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এবার বাকি সাংসদরাও তা নিয়ে সওয়াল করতে পারেন। কারণ এখন প্রত্যেকেরই অস্তিত্ব সংকটে। এই সাংসদরাও একুশের নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন। সুতরাং পরাজয়ের দায় তাঁরা এড়িয়ে যেতে পারেন না। তাই তাঁদেরও তলব করা হয়েছে।
আবার হেস্টিংসে যখন বৈঠক করছেন দিলীপ ঘোষ তখন অমিত শাহর বাড়িতে শুভেন্দু। এমনকী হেস্টিংসের বৈঠকে রাজীব–মুকুলও অনুপস্থিত ছিলেন। যা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। আবার শুধু শুভেন্দু অধিকারীকে কেন ডাকা হল তা নিয়ে দলের অন্দরেই চোরাস্রোত তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সূত্রে জানা যায়, শুভেন্দুকে হাইলাইট করে মমতার ‘ব্যক্তিগত পরাজয়’ কে বারবার উস্কে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শুভেন্দুকে মাইলেজ দেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছিল দলের অন্দরেই। বিজেপি অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল সে গুঞ্জন। তাই বাকিদেরও ডাকা হল বলে মনে করা হচ্ছে।