মহার্ঘভাতা বা ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে তিন শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা (ডিএ) পাবেন সরকারি কর্মীরা। রাজ্যের সব কর্মচারী ১ জানুয়ারি থেকে তিন শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। যাঁদের বার্ষিক বেতন দু'লাখ টাকার বেশি, তাঁরাও এই ডিএ পাবেন।
ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের টানাপোড়েন চলছে। কয়েকদিন আগে নবান্নে ডিএ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন কর্মচারী সংগঠন ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকের পর ওই ঘোষণা করেন তিনি। যা মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করা হচ্ছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে খুশির জোয়ার এসেছে সরকারি কর্মচারি মহলে। কারণ পুরনো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে যাঁদের বেতন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত, তাঁরাই শুধু এই ডিএ পাবেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত বদল করা হল। এখন নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সবাই ডিএ পাবেন। নবান্ন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। এমনিতে ডিএ বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালতেও। গত বছর ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হলেও সেটা ছিল ডিএ–বিহীন। তার পর এই প্রথম ডিএ বাড়ানো হল রাজ্যে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে বকেয়া রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা। এই নিয়ে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করেছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলি। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল (স্যাট) নির্দেশ দেয়, তিন মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে বকেয়া ডিএ। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারি হারে রাজ্যের কর্মীদের মহার্ঘভাতা দিতে হবে। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য। কিন্তু নবান্নের আর্জি খারিজ হয়ে যায় স্যাটে। বহাল থাকে ২০১৯ সালের রায়। বকেয়া ডিএ মেটাতে সময়সীমা বেঁধে দেয় স্যাট। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নবান্নকে বকেয়া ডিএ মেটাতে নির্দেশ দেয় রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল বা স্যাট।
এই পরিস্থিতিতে জানুয়ারি থেকে তিন শতাংশ হারে ডিএ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। আগে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ২,২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এখন সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের তিন শতাংশ হারে ডিএ দেওয়া হলে স্বাভাবিকভাবেই খরচ আরও বাড়বে। তবু তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। নতুন বছরে নতুন খবরে সামান্য খুশি সরকারি কর্মচারীরা।