বগটুইকাণ্ড নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। ওয়েলেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। চলে ধাক্কাধাক্কি। যা হাতাহাতিতে গড়ায়। শুধু তাই নয়, সেই হাতাহাতিতে ঝরেছে রক্তও। যদিও সেই ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়করা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুইয়ের নৃশংসতা নিয়ে সোমবার বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। সেই নৃশংস ঘটনা নিয়ে আলোচনার দাবি তুলতে থাকেন তাঁরা। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। সেইসময় বিজেপি এবং তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। রীতিমতো তুলকালাম বেঁধে যায়। বিধায়করা ধস্তাধস্তি করতে থাকেন। যা হাতাহাতিতে গড়ায়।
ধস্তাধস্তির জেরে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার পোশাক ছিঁড়ে গিয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটে গিয়েছে। রক্ত ঝরেছে তাঁর। তৃণমূলের অভিযোগ, অসিতকে বিধানসভার মেঝেতে মারা হয়। দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চুঁচুড়ার বিধায়কের অভিযোগ, মহিলা বিধায়কদের হেনস্থা করা হচ্ছিল। সেইসময় প্রতিবাদ করায় শুভেন্দু নাকে ঘুষি মারেন।
সেই ঘটনার পর বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দু দাবি করেন, অধ্যক্ষের সামনে প্রাথমিকভাবে বিজেপি বিধায়কদের আক্রমণ করেছে কলকাতা পুলিশের সাদা পোশাকে পরিহিত আধিকারিকরা। তারপর তপন চট্টোপাধ্যায়, শওকত মোল্লা-সহ আট-জনের একটি দল বিজেপি বিধায়কদের উপর হামলা চালিয়েছে। বিজেপি বিধায়কদের জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। মারা হয়েছে ধাক্কা। ঘুষি মারা হয়েছে। রেয়াত করা হয়নি চন্দনা বাউরি, তাপসী মণ্ডলের মতো মহিলা বিধায়কদেরও। শুভেন্দু বলেন, ‘দায়িত্ব বিরোধী নেতা হিসেবে ৩০ মিনিট বিক্ষোভ দেখানোর কথা বলেছিলাম।’ সঙ্গে বলেন, ‘আজ প্রমাণ হয়ে গেল, বিধানসভার ভিতরেও বিরোধী নেতারা সুরক্ষিত নন।’
আরও পড়ুন: শাসক-বিরোধীদের কিল, ঘুষি, হাতাহাতি বিধানসভায়! সাসপেন্ড শুভেন্দু-সহ ৫ BJP বিধায়ক
যদিও শুভেন্দুর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘এরা (বিজেপি) গুণ্ডামি করতে এসেছে। গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে সন্ত্রাস করেছে। এখানেও সন্ত্রাস করছে। আমরাও বিরোধী ছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করতাম।’ তাঁর দাবি, প্রতিদিন বিধানসভার অধিবেশনে হাঙ্গামা করছে। অন্যদিকে, সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, বিধানসভা আন্তর্জাতিক খোঁয়াড়ে পরিণত হয়েছে। আগে শিক্ষিত মানুষেরা বিধানসভায় যেতেন।