জোর করে মেয়ের মৃতদেহের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে সই করিয়ে নিয়েছিলেন কাউন্সিলর। এমনই অভিযোগ তুললেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মা। তিনি দাবি করেছেন, গত ৯ অগস্ট যখন মর্গে ছিলেন, সেইসময় তাঁর উপরে চাপ তৈরি করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর। মৃতদেহের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে সই করতে বাধ্য করেছিলেন। তৃণমূল কাউন্সিলর যুক্তি দিয়েছিলেন যে তখনই মৃতদেহের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে সই না করলে ‘অনেক দেরি’ হয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে তিনি সই করতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তরুণী চিকিৎসকের মা। আর তারপরই প্রশ্ন উঠেছে যে মৃতদেহের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে কিছুটা পরে সই করলে ঠিক কোন কাজে ‘দেরি’ হয়ে যেত? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য আপাতত দেননি তৃণমূল কাউন্সিলর। যিনি আগে অবশ্য দাবি করেছিলেন যে কোনও তাড়াহুড়ো করা হয়নি।
ঠিক কী বলেছেন তরুণী চিকিৎসকের মা?
তরুণী চিকিৎসকের মা অভিযোগ করেন, ‘হাসপাতালে আমাদের কাউন্সিলর জোর করিয়ে মৃতদেহের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে সই করিয়ে নিয়েছিলেন। দেহ হস্তান্তরের জন্য যে সার্টিফিকেটে সই করতে হয়, তাতে জোর সই করিয়ে নিয়েছিলেন। (সেদিন আমি) মর্গে ছিলাম।’
‘নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে….’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন শুধু আমার সঙ্গে ভাগ্নে ছিল। ও বলছিল যে মামি সই করবে না। আমি বলছিলাম যে সই করব না। কিন্তু উনি বলছিলেন যে এটায় করতে হবে। এখনই করতে হবে, নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমি বলছিলাম যে বাড়ির লোক এলে আমি করব। বলছিলেন যে না, এখনই করতে হবে।’
‘কোনও তাড়াহুড়ো করা হয়নি’
যদিও সপ্তাহদুয়েক আগে ওই তৃণমূল কাউন্সিলর দাবি করেছিলেন, ৯ অগস্ট যখন তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন, তখন ময়নাতদন্তের জন্য তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তারপর ময়নাতদন্ত হয়েছিল। সই করে মৃতদেহ নিয়েছিল পরিবার। তারপর শ্মশানে গিয়েও কোনও তাড়াহুড়ো করা হয়নি বলে দাবি করেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর।
‘দেহ দাহ করতে বাধ্য করা হয়েছিল’
তরুণী পরিবারের তরফে অবশ্য অভিযোগ করা হয়েছে যে পুলিশের তরফে তাঁদের উপরে চাপ তৈরি করে দেহ দাহ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ৪ সেপ্টেম্বর আরজি কর হাসপাতালে এসে তরুণী চিকিৎসকের বাবা বলেছিলেন, ‘আমরা দেহটা রেখে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের উপরে এত প্রেশার তৈরি করা হয়েছিল....।’ সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, 'বাড়িতে গিয়ে দেখি যে আমার বাড়ির সামনে ব্যারিকেড করে ৩০০-৪০০ পুলিশকর্মী দাঁড়িয়ে আছেন। সেই অবস্থায় আমাদের আর কিছু করার ছিল না। আমরা মেয়ের দেহ দাহ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।’