বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে যদি দলছুটের সংখ্যা বাড়ে তাহলে নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়তে হবে। দলছুটের তালিকায় নাম লেখাতে গিয়েছিল হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাও। কিন্তু তাঁকে চাপকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। শুভেন্দুর ক্ষেত্রে পিকে মহাশয়কে পাঠালেও তিনি ঘরে ফেরেননি। তাই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলছুট আটকাতে বিভিন্ন বিষয়ে দলের বক্তব্য জানানোর জন্য দলের নেতাদের জন্য নতুন ‘রোস্টার’ তৈরি করেছে তৃণমূল।
সেখানে বলা হয়েছে, বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত তৃণমূল ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ওই নেতারা বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে তাঁদের বক্তব্য জানাবেন। বাকি সময় তাঁরা চাইলে বাড়ি বা অন্যত্র থেকে বাংলা, ইংরেজি বা হিন্দিতে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারবেন। আসলে শুভেন্দু এবং তাঁর বাবা শিশির অধিকারীর পিকে মহাশয়কে করা সাম্প্রতিক মন্তব্য হল, দল তাঁর কথা শুনতে চায়নি। শিশিরবাবু বলেছিলেন, শুভেন্দুর কথা কী কেউ শুনতে চেয়েছিল? অর্থাৎ দলকে অনেকের অনেক কথা বলার থাকতে পারে। সেই সুযোগই করে দেওয়া হল।
তৃণমূলের একাংশের মতে, সময় বেঁধে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দলে শৃঙ্খলা পেশাদারিত্বের বার্তা আরও বেশি করে দিতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের কাছে কে মুখ খুলবেন, তা নির্দিষ্ট করে নিয়ে মুখপাত্রদের নাম জানিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। এবার সেই নামগুলির মধ্যে কয়েকজনের নাম যুক্ত করে তাঁদের জন্য এই সাপ্তাহিক ‘রোস্টার’ তৈরি করে দেওয়া হল। আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত এই তালিকাই বহাল থাকবে বলে খবর।
দলীয় সূত্রে খবর, ‘রোস্টার ডিউটি’ থাকবে সপ্তাহের ৬দিন। আর রবিবার ছুটি। সোমবার এবং শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। বৃহস্পতিবার এবং শনিবার কথা বলবেন বিশ্বজিৎ দেব। মঙ্গলবার মন্ত্রী শশী পাঁজা, বুধবার ওমপ্রকাশ মিশ্র, বৃহস্পতিবার নির্বেদ রায় এবং শনিবারের জন্য নাদিমুল হকের নাম রয়েছে। বৃহস্পতিবার এবং শনিবারের জন্য দু’জন করে নেতার নাম রয়েছে। বাকি চারদিন একজন করেই ওই দায়িত্ব সামলাবেন। তবে সপ্তাহের ‘যে কোনও একটি দিন’ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্যসভার সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী এবং রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এমনকী দলের ভেতরে কথা বলার জন্য এই দিনগুলিতে নেতা–মন্ত্রী–সাংসদরা সুযোগ পাবেন। গ্রাউন্ড রিয়েলিটি নিয়ে তাঁরা কথা বলবেন। এখন দেখার দলছুট আটকানো যায় কিনা।