বাংলায় ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। এই সরকারকে বলা হয় মা–মাটি–মানুষের সরকার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নামকরণ করেছেন। তারপর ২০১৬ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে হ্যাট্রিক করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এখন বাংলায় এই সরকারের ১৩ বছর বয়স। তার মধ্যে একাধিক জনমুখী সামাজিক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। নারী ও মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র–যুবদের জন্যও চালু হয়েছে স্কলারশিপ থেকে শুরু করে নানা প্রশিক্ষণ। জনগণের উন্নয়নে খরচ করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সেই উন্নয়নের খতিয়ান নানা সভা–সমাবেশ থেকে তুলে ধরা হয়। এবার টানা ১৩ বছরের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে বই প্রকাশ করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার।
আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে বাংলায় আবার বিধানসভা নির্বাচন। আর তার জন্যই ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত যা কাজ করা হয়েছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন মা–মাটিমানুষের সরকার কী কী কাজ করেছে বাংলার মানুষের জন্য সেগুলি পরিসংখ্যান–সহ তুলে ধরা হবে ওই বইতে। সেই কাজ এখন চলছে। বাংলার মাটিতে স্বাস্থ্য, রাস্তা, জল, খাদ্য–সহ নানা বিষয়ে কতটা কাজ হয়েছে তাও তুলে ধরা হবে ওই বইতে। সঙ্গে থাকবে সামাজিক প্রকল্পও। সেখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী–সহ যতগুলি প্রকল্প আনা হয়েছে সবের স্ট্যাটাস তুলে ধরা হবে। এই কাজের দায়িত্ব পড়েছে দুই মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও ব্রাত্য বসুর উপর বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগরে দুই পুণ্যার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন, এয়ারলিফট করে কলকাতার হাসপাতালে
এই বইতে বাড়তি কাজ যা রাজ্য সরকারের করার কথা নয় অথচ করতে হয়েছে সেটাও উল্লেখ করা থাকবে। একশো দিনের কাজের টাকা থেকে শুরু করে আবাস যোজনার টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে। যা কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা। সেসবও উল্লেখ করা থাকবে বলে সূত্রের খবর। বাংলায় আগে কোনও সরকারই কাজের ফিরিস্তি দেয়নি। এই প্রথম তৃণমূল কংগ্রেস সরকার কাজের খতিয়ান দিয়ে বই বের করছে। যাতে মানুষ ওই বই দেখে মিলিয়ে নিতে পারেন বাস্তবে সেসব কাজ হয়েছে কিনা। মহিলাদের উন্নয়নে ঠিক কতটা কাজ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার সেটাও ওই বইতে বিশদে থাকবে বলে খবর।
এছাড়া শহর ও গ্রামবাংলা জুড়ে কাজের খতিয়ানও থাকবে। ওই বইতে প্রত্যেক জেলা ধরে ধরে উন্নয়নের কাজ লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। যাতে গ্রামীণ মানুষও জানতে পারেন তাঁর জেলায় কেমন কাজ হয়েছে। এটাই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড় আকার ধারণ করবে। কারণ আর বাকিরা সবাই ইস্তেহার বের করবে। অর্থাৎ সরকারে এলে কী কাজ করবে তার ফিরিস্তি। আর তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক–সাংসদ–নেতারা এই বই নিয়ে প্রচারে নামবেন। সুতরাং কাজের নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে থাকছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া নানা পরিসংখ্যানকেও তুলে ধরা হচ্ছে বইতে। এই বই তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেখান থেকে যাবে সাধারণ মানুষের কাছে।