পাটুলির ঘটনায় এবার কড়া পদক্ষেপ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেয়াদপি যে তিনি বরদাস্ত করবেন না সেটা এবার স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন। আর তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি শোকজ করলেন দুই তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরকে। একজনের নাম স্বরাজ মণ্ডল এবং অপরজনের নাম তারকেশ্বর চক্রবর্তী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে বিশ্রাম নিতেই সংগঠনের রাশ নিজের হাতে আবার শক্ত করে ধরলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। লোকসভা নির্বাচনের পর খাস কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক কাউন্সিলরের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছে। তার দেরে বোমাবাজি পর্যন্ত হয়েছে। এসব অবিলম্বে বিনাশ করতে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে ডেকে পাঠিয়ে তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দেন, এসব তিনি মেনে নেবেন না। এক্ষুণি শোকজ করতে হবে।
এদিকে এই শোকজের পর বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়গড়ের সমাজগড়ে ডেকে পাঠানো হয় তারকেশ্বর চক্রবর্তী এবং স্বরাজ মণ্ডলকে। টালিগঞ্জ ও যাদবপুরের পরির্দশক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁদের ডেকে পাঠান। তার আগে দুপুরে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ডাকেন স্বরাজ মণ্ডলকে। গোটা ঘটনা জেনে দ্রুত এই দ্বন্দ্ব মেটাতে নির্দেশ দেন। যদিও ফিরহাদ হাকিমের ডাকে সাড়া দেননি তারকেশ্বর চক্রবর্তী বলে সূত্রের খবর। আর রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি শুক্রবার ওই দুই কাউন্সিলরের উদ্দেশে শোকজের চিঠি ইস্যু করেন। আর তা তাঁদের হাতে তুলে দেন। অরূপ বিশ্বাসের এলাকার এই দুই কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন: বাঁধের সম্প্রসারিত অংশ ভাঙতে শুরু করেছে, জনমানসে আতঙ্ক, ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত সেচ দফতরের
অন্যদিকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বরাজ মণ্ডল। তিনদিন আগে স্বরাজ মণ্ডলকে মেরে কান ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। স্বরাজের অনুগামীদের অভিযোগের নেপথ্যে রয়েছেন ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারকেশ্বর চক্রবর্তী। পাটুলির মেলার মাঠে এলাকার কাউন্সিলর স্বরাজ মণ্ডলের কার্যালয় আছে। সেখানে সপ্তাহে একদিন বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার বসেন। অভিযোগ উঠেছে, নিজের কার্যালয়ে কাউন্সিলর বসতে গেলে বিধায়ক এবং ১১ নম্বর বোরো চেয়ারম্যান তারকেশ্বর চক্রবর্তীর অনুগামীরা তাঁকে বসতে না দেওয়ার জন্য সরব হন। এই নিয়ে বচসা শুরু হলে মেরে কান ফাটানো হয়।
এছাড়া যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন তারকেশ্বর চক্রবর্তী। তবে এই দুই কাউন্সিরলকে শোকজ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে সতর্ক করতে চেয়েছেন। কারণ কলকাতায় এখন বহু পাড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। আবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে, পুরসভা এলাকায় প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা বেশ বড় আকার নিয়েছে। বহু ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে যেখানে অবাঙালির সংখ্যা বেশি, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতেই এবার কড়া অবস্থান নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।