কংগ্রেসের মাথাদের গায়ে হাত দেয়নি ইডি–সিবিআই। এই মন্তব্য করেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস বিজেপি বিরোধিতা করে কিন্তু হারে। আর তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে হারায়। এই মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে জোর শোরগোল রাজনীতির ময়দানে। তার মধ্যেই দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল কংগ্রেস। এই রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, কংগ্রেসের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে তারা সম্মান করে। কিন্তু এখন কংগ্রেস পচা ডোবায় পরিণত হয়েছে। আর কংগ্রেসের সেই ঐতিহ্যকে বহন করছে তৃণমূল কংগ্রেসই।
মুখপত্রে এভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জোট কতটা দৃঢ় হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এখন কংগ্রেসে ভাঙনও ধরেছে। পাঁচবারের বিধায়ক মইনুল হকও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। প্রণব–পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ও এখন তৃণমূল কংগ্রেসে। সুস্মিতাকে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে। মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার সঙ্গেও কথা চলছে বলে সূত্রের খবর। সুতরাং কংগ্রেসের হাল এখন বেহাল। এই পরিস্থিতিতে ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে কংগ্রেস প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে ধন্দ তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখপত্রে যা উঠে এসেছে তাতে শাসকদলের বক্তব্য, ‘বাংলায় কংগ্রেস দীর্ঘ সুযোগ পেয়ে সিপিআইএমকে হারাতে পারেনি। আর তার ফলেই তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়। কংগ্রেসের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। কিন্তু বামফ্রন্ট বিরোধী লড়াইটা করতে পারেনি কংগ্রেস। সেই লড়াইয়ের ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসের অধিকাংশ সমর্থক এখন মনে করছে তৃণমূলই আসল কংগ্রেস। এখানকার কংগ্রেস ব্যর্থ, দিশাহীন। কংগ্রেসের ঐতিহ্যের পতাকা আজ তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। এটাই সমুদ্র। পচা ডোবা আজ অপ্রাসঙ্গিক।’
সম্প্রতি জাগে বাংলায় লেখা হয়েছিল, রাহুল গান্ধী ব্যর্থ। সর্বভারতীয় জোটের মুখ মমতাই। তাতে কম জলঘোলা হয়নি। এবার কংগ্রেসকে পচা ডোবা বলায় তা আরও জটিল হয়ে গেল জোট বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসই আসল কংগ্রেস উল্লেখ করা হয়েছে বলে অনেকেই মনে করতে শুরু করেছেন সর্বভারতীয় স্তরে কী তৃণমূল কংগ্রেস একক শক্তিতে লড়বে? তবে শাসকদলের বক্তব্য, ‘কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোটের কথা আমরা বলছি না। কিন্তু কংগ্রেস যদি বারবার ব্যর্থ হয়, ২০১৪, ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির সুবিধা হয়ে যায়, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যায় না। বাংলায় যদি আসল কংগ্রেস এখন তৃণমূল হতে পারে তাহলে আগামীদিনে সারা দেশের আসল কংগ্রেস হয়ে তৃণমূল লড়াই করবে।’