আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর এই ঘটনার জেরে দু’মাসের বেশি সময় ধরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে সিনিয়র ডাক্তাররাও যোগ দিয়েছেন। কর্মবিরতি থেকে শুরু করে আমরণ অনশন এবং পরে দ্রোহের কার্নিভাল করেছেন তাঁরা। আর শুরু থেকেই এই ঘটনা নিয়ে যিনি সরব থেকেছেন এবং রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করে গিয়েছেন সেই চিকিৎসক হলেন সুবর্ণ গোস্বামী। যাঁর বিরুদ্ধে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মারাত্মক অভিযোগ আনলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ এবং আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
ইতিমধ্যেই ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। তার নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আর এই উপনির্বাচন নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করে দিলেন কুণাল ঘোষ। বাংলার ৬টি আসনে ভোট হতে চলেছে আগামী ১৩ নভেম্বর। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের ভবিষ্যদ্বাণী, এই উপনির্বাচনে আরজি কর হাসপাতাল ইস্যুর কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং তৃণমূল কংগ্রেস হবে ক্লিন উইনার। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি খোঁচা দিয়েছেন সিপিএমকে। ফেসবুক পোস্টে কুণাল লিখেছেন, ‘যারা ইদানিং মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়াতে লাফাচ্ছে, সেই সিপিএম, লিখে রাখুন, ৬টাতেই আবার তৃতীয় বা চতুর্থ। সিপিএম ৬টা ‘০’ পাবে। চললাম। এবার হতাশাগ্রস্ত শকুনেরা লেগে পড়ুন।’
আরও পড়ুন: ‘পুজো কমিটির সঙ্গে অসভ্যতা করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা’, এক্স হ্যান্ডেলে দাবি কুণালের
এবার সামনে এসেছে ২৩ বছর আগের ঘটনা। আরজি কর হাসপাতালের এক ডাক্তার পড়ুয়ার ‘রহস্যমৃত্যু’ হয়েছিল। তারিখটা ২০০১ সালের ২৫ অগস্ট। এই ঘটনার পর মৃতের মা সবিতাদেবী অভিযোগ করেছিলেন, আরজি কর হাসপাতালের পর্নোগ্রাফি চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জেরেই ‘খুন’ হতে হয়েছে তাঁর ছেলেকে। ‘দুবেজি’, ‘ধরবাবু’ এবং ‘গোঁসাই ঠাকুর’—এই তিনজন এসএফআই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন মৃত সন্তানের মা। যৌনকর্মী ভাড়া করে এনে শ্যুটিং হতো সেখানে বলে তথ্য পায় তৎকালীন সিআইডি অফিসাররা। আরজি কর হাসপাতালের তখনকার শীর্ষ এসএফআই নেতা ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী এসব অভিযোগ মিথ্যে বলেছিলেন।
ঠিক কী লিখেছেন কুণাল? এই গোটা ঘটনার কথা আজ একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। আর সেটা তুলে ধরেই আজ, বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘গোঁসাইঠাকুর কে? আমি তো কলা খাইনি!’ তারপর ওই সংবাদপত্রের রিপোর্টের সঙ্গে ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামীর ছবি জুড়ে দিয়ে তলায় লিখেছেন, ‘বাম আমলের ডাক্তারি ছাত্র খুন ও পর্ণ চক্রের পান্ডা!’ আর দেবাংশু লেখেন ফেসবুকে, ‘২০০১ সালের ২৫ অগষ্ট। আরজি কর কলেজের হস্টেল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয় চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাসের। অভিযোগ ওঠে হস্টেলের মধ্যে পর্ন চক্র চালাত সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের নেতারা। তার জেরেই এই খুন। সেদিন কোনও উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে আন্দোলনও হয়নি। বরং সেদিন ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছিলেন আরজি করের এসএফআই নেতা সুবর্ণ গোস্বামী। হ্যাঁ, সেই একই ব্যক্তি যিনি তিলোত্তমা কাণ্ডে গলার শিরা ফুলিয়ে ১৫০ গ্রামের থিওরি বলেছিলেন। সেদিনের ছাত্র খুন ও পর্ন চক্রের মূল পান্ডা আজকের আন্দোলনের প্রধান মুখ।’