আজ, শুক্রবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নিশানায় এবার মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেল থেকে টেন্ডার দুর্নীতি। আর তা নিয়ে নানা কথা বলার পর তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষ। বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর নিশানায় প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই–প্যাক। এই সংস্থাকে বেআইনি পথে সরকারি টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা। প্রমাণ হিসেবে কিছু নথি দেখান। যদিও তাঁর এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের খোঁচা, ‘চোরের মায়ের বড় গলা।’
এদিন শুভেন্দু অধিকারীর একাধিক অভিযোগের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কুণাল ঘোষ। আর প্রতিটি অভিযোগ যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করেন। তিনি বলেন, ‘এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে। আমরা এসবের কড়া ভাষায় নিন্দা করছি। শুভেন্দু অধিকারীর কথা আসলে চোরের মায়ের বড় গলা। একটা চোর জোচ্চোর। তার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম রয়েছে। সারদা–নারদায় অভিযুক্ত। গ্রেফতার এড়াতে বিজেপিতে গিয়েছে। একটি সংস্থার টেন্ডার পাওয়া নিয়ে যে অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী আজ করেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক, ভিত্তিহীন। কাউকে নিয়ম বহির্ভূত কোনও সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়নি।’
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ নামে একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অভিযোগ জানানো যেত মুখ্যমন্ত্রীকে। আজ শুভেন্দু এই গ্রিভান্স সেলের বিরুদ্ধে সরব হন। শুভেন্দুর অভিযোগ, নিয়ম বহির্ভূতভাবে দিল্লির একটি সংস্থাকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। আই–প্যাক নামের ঘনিষ্ঠ সংস্থা দায়িত্ব পায়। এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত। পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘উনি যদি রাজ্যপালকে মেল করেন, তাহলে আমিও কাঁথি পুরসভার দুর্নীতির নানা তথ্যপ্রমাণ রাজ্যপালকে পাঠাই। টেন্ডারে যা ক্রাইটেরিয়া ছিল সেটা হাইলি টেকনিক্যাল বিষয়। যাঁরা যা সুযোগ পেয়েছেন তার ওপর দাঁড়িয়েই কাজ দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী এত বড় বড় কথা বললেন, রাজ্যপাল, পিএমএলে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। আমরাও বলছি যে কাঁথি পুরসভার অ্যাকাউন্টে সারদার টাকা ঢুকেছিল। পিএমএলে, ইডি, সিবিআইয়ের অবিলম্বে উচিত শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা। কারণ সুদীপ্ত সেনের চিঠি সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ‘ইলেকট্রিক মিটার যার, পানীয় জল তার’, পরিশ্রুত জলের সংযোগ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নবান্নর
আর কী বলেছেন কুণাল? অন্যদিকে গ্রিভান্স সেলের মাধ্যমে মানুষের ২২ লক্ষ অভিযোগ শোনা হয়েছে। মানুষের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যোগাযোগ আরও বাড়ানোর জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর শুভেন্দুর অভিযোগ নিয়ে কুণালের বক্তব্য, ‘শুভেন্দু অধিকারী মনগড়া কথা বলে অভিযোগ তুলে নাটক করতে চাইছেন।’ আর শুভেন্দুর অভিযোগ, ওয়েবেলের থেকে নিয়ে ডব্লুটিএলকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়। এই দু’পক্ষের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে।