একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকের দমবন্ধ হয়ে আসছিল। তাই তাঁরা সেফ জোনে যেতে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। আর নির্বাচনের ফলাফল বেরতেই উলটপূরাণ দেখা যায় বঙ্গে। একাধিক বিধায়ক–সহ নেতা–কর্মীরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসতে দেখা যায়। আর ২০২২ সালে একাধিক দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হযেছেন শাসকদলের নেতা–মন্ত্রী। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে। এই পরিস্থিতিতে মিঠুন চক্রবর্তীকে সামনে নিয়ে এসেছে বিজেপি। যাঁকে দিয়ে বাংলার মানুষের হৃদয় জিততে চাইছে গেরুয়া শিবির।
ঠিক কী বলছেন মিঠুন চক্রবর্তী? আজ, মঙ্গলবার চুঁচুড়াতে তিনি বলেন, ‘আবার তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে নেতারা পদ্মমুখী হচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ২১ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন। ৩৮ জন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তার মধ্যে ২১ জন আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে। এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁদের দমবন্ধ মনে হচ্ছে। সবাই তো চুরি করেননি। এই কনফিডেন্সটা আমি দিচ্ছি। তাঁরা সবাই সমান নয়। আমি যাঁদের নাম নিয়েছি, তাঁরা এমন নন। এরপর শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন। অনেক তৃণমূল বিধায়ক আছেন, যাঁরা সরাসরি নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। না খায়া, না পিয়া, গ্লাস তোরা চার আনা।’ আর এই মন্তব্যেই এবার পাল্টা বিস্ফোরক তথ্য দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
ঠিক কী বলেছেন কুণাল ঘোষ? তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণা ঘোষ বলেন, ‘হাস্যকর অরাজনৈতিক বক্তব্য, নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা, কে কত বলবেন। নির্বাচনের আগের যোগদানগুলি মনে আছে? যাঁরা চার্টাড প্লেন ধরে গিয়েছিলেন, তাঁরা এখন অটো ধরে ফিরে আসছেন। আর এই ধরনের কথাগুলি সম্পূর্ণ হাস্যকর, একদিকে সুকান্ত বিজেপি, অন্যদিকে দিলীপ বিজেপি। রাজ্য বিজেপির প্রতি কেন্দ্রের আস্থা নেই বলে, অতিথি শিল্পীকে এখানে নাটক করতে পাঠানো হয়েছে। মিঠুনদা কি অমিতাভ বচ্চনের দিওয়ার দেখেননি? দিওয়ার দেখে নিন। সেখানে অমিতাভ বচ্চন বলছেন, আমাদের কাছে গাড়ি আছে, বাড়ি আছে, তোমার কাছে কী আছে? তখন শশী কাপুর বলছেন, আমাদের কাছে মা আছেন। বাংলার সমস্ত মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের পাশে আছেন।’
এমন মন্তব্যের অর্থ কী? সূত্রের খবর, বিজেপি এই সরকারকে ফেলে দেওয়ার নানা চেষ্টা করছেন। তাই সুকান্ত–দিলীপ–শুভেন্দু সরকার পড়ে যাবে বলে মন্তব্য করে চলেছেন। আবার সবাই গ্রেফতার হবে বলেও মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হতে পারেন বলেও মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। মিঠুন চক্রবর্তীকে দিয়ে দল ভাঙানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে এইসব কিছুই করতে পারবে না বিজেপি। সেটা বোঝাতেই এই মন্তব্য কুণালের।