অধিকারী পরিবারের হাটে এবার হাঁড়ি ভেঙে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আয়কর রিটার্ন দেখিয়ে শুভেন্দু অধিকারী নিজেকে স্বচ্ছ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল, পাল্টা তাঁর বাবার (শিশির অধিকারী) নির্বাচনী হলফনামা সামনে নিয়ে এসে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন তিনি। এমনকী সেখানে থাকা গরমিলও কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। শুক্রবার কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘অধিকারী পরিবারের সব আর্থিক বেনিয়ম সামনে আসবে।’ আর শনিবারই নিজের এক্স হ্যান্ডলে শিশির অধিকারীর সম্পত্তির তথ্য তুলে ধরলেন। সেখানে সম্পদের গরমিলের কথা তুলে ধরে, সেটা কোন জাদুবলে সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল।
এদিকে টুইটে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সম্পত্তির বিবরণ এবং নানা তথ্য তুলে ধরে কুণাল জানতে চেয়েছেন, ‘পরিসংখ্যান সত্য নাকি ভুল? ১০ লাখ কীভাবে ১০ কোটি টাকা হল? কীভাবে ১০ কোটি কমে ৩ কোটিতে এলো? এটা কি জাদু?’ সুতরাং গোটা সম্পদের উপর যে একটা গরমিল রয়েছে তা বোঝাতে চেয়েছেন কুণাল ঘোষ। আর তাতেই বিপাকে পড়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী–সহ গোটা অধিকারী পরিবার। তাই এই তথ্য জানার পরও এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি অধিকারী পরিবারের কেউ। পরিস্থিতি যে অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে সেটা বাড়ির ভিতরে আলোচনা শুরু হতেই বোঝা গিয়েছে। এই টুইট নিয়ে অধিকারীদের বাড়ি শান্তিকুঞ্জে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে কুণাল ঘোষ তাঁর বয়ানের সপক্ষে টুইটে নির্বাচন কমিশন এবং ভারত সরকারকে দেওয়া শিশিরবাবুর বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন। তাতে দাবি করা হয়েছে, ২০০৯ সালে সাংসদ হিসেবে শিশির অধিকারী নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১০ লাখ টাকার কিছু বেশি। আবার ২০১২ সালে তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন ভারত সরকারকে জমা দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, শিশিরবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটির কিছু বেশি। সেই সম্পত্তিই ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনকে জমা দেওয়া শিশিরবাবুর তথ্য অনুযায়ী তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটির কিছু বেশি। এত ওঠা নামা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন: সভার দিন পরিবর্তন করল তৃণমূল কংগ্রেস, কবে হবে আন্দোলনের স্ট্র্যাটেজি বৈঠক?
ঠিক কী লিখেছেন কুণাল? ২০০৯ সালে নির্বাচনী হলফনামায় শিশির অধিকারী জানিয়েছিলেন, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। তারপর তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। আর ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ঘোষণা অনুযায়ী, সেই সম্পদের পরিমাণই দাঁড়ায় ১০ কোটির বেশি। কিন্তু ২০১৯ সালে শিশিরববাবু জানান, সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি। এই তথ্য তুলেই কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, ‘তথ্য ঠিক না ভুল? ১০ লাখ তিন বছরে ১০ কোটি হল কী করে? ১০ কোটি কী করে কমে ৩ কোটি হল? এটা কোন জাদু?’ শিশিরবাবু অফিসিয়ালি এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা। শুভেন্দু বিজেপির বিধায়ক। গত বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, হলদিয়া এবং দিঘায় সরকারি জমি কেনা বেচা নিয়ে বেনয়িমের অভিযোগের তদন্ত শুরু হবে। বিজেপি নেতাদের সম্পত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই এই তথ্য ফাঁস।