উপনির্বাচনে জয়ী হয়েও শপথ নিতে পারছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের নবনির্বাচিত দুই বিধায়ক। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের জেদের জেরে তা থমকে আছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–নেত্রীদের। এই বিস্তর টানাপোড়েনের জেরে বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে বসে ধরনা দিচ্ছেন দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক। বরাহনগর থেকে জয়ী হয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভগবানগোলা থেকে জয়ী হয়েছেন রেয়াত হোসেন সরকার। কিন্তু এখনও শপথ নেওয়া হল না তাঁদের। আজ সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আবার একদফা চিঠি পাঠালেন সায়ন্তিকারা। এই আবহেই এবার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ আগাম খবর দিয়ে দিলেন। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আজ, সোমবার এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে বিধানসভায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। গেট থেকে তাঁকে রিসিভ করে ভিতরে নিয়ে আসবেন বলেছেন স্পিকার। কিন্তু তারপরও আজ শপথ হয়নি দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের। এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘যেটুকু খবর পেয়েছি, স্পিকার তাঁর বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছেন। দুই বিধায়কও তাঁদের আবেদন করেছেন। সর্বশেষ যেটুকু জানি, রাজ্যপাল এখন কলকাতায় নেই। নয়াদিল্লিতে রয়েছেন কোনও কাজে। আমরা আশাবাদী তিনি নয়াদিল্লি থেকে ফেরার পরই এই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন। দুই বিধায়কের শপথের জটিলতা কেটে যাবে।’
আরও পড়ুন: হাওড়া–এনজেপি শতাব্দী এক্সপ্রেসে জুড়ল ভিস্তাডোম কোচ, প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে বিশেষ ব্যবস্থা
কিন্তু রাজ্যপাল কলকাতায় ফিরলে জটিলতা কেটে যাবে জানলেন কী করে কুণাল? এই নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে। যদি এই খবর পাকা হয় তাহলে আর বিধানসভায় ধরনা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আগাম কর্মসূচি কুণাল ঘোষ ঘোষণা করে দেওয়ায় রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক ভাল হলেও রাজ্যপালের নানা সিদ্ধান্তে রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে কুণাল ঘোষকে। এখন তিনিই আগাম জানিয়ে দিচ্ছেন রাজ্যপাল নয়াদিল্লি থেকে ফিরলেই জটিলতা কাটবে। আদৌ কি সেটা সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন। এই দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ না হওয়া নিয়ে কুণাল ঘোষ হুঙ্কার দিয়েছিলেন, জটিলতা শেষ না হলে ‘আনটোল্ড স্টোরি অফ হোটেল তাজ প্যালেস’ প্রকাশ্যে আসবে।
এতবার চিঠি লেখা এবং বলা হলেও রাজ্যপাল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। তাই এই দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজভবনে বাংলার মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। সেখানে যা সব কীর্তিকলাপ ঘটছে। এই মন্তব্য কদিন আগে করার জেরে রাজ্যপাল তেতে ওঠেন। মানহানির মামলা করার কথা বলেন সিভি আনন্দ বোস। সেখানে আজ কুণাল ঘোষের কথায়, ‘রাজ্যপালের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক দ্বিমত আছে। কিন্তু তিনি বয়সে বড়। তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা করি। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলে সমালোচনা হবেই। এখন দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে জট হয়ে রয়েছে। রাজ্যপাল সেই জটটা খুলতে পারেন। তিনি কলকাতার বাইরে। যেটুকু জানি, কলকাতায় ফিরেই তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।’