আজ, শুক্রবার সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় রেশন দুর্নীতির তদন্তে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। আর সেখানে গিয়ে বেধড়ক মারধর খেয়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান অফিসাররা। পালাতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও। মাথা ফেটেছে, গাড়ি ভেঙেছে। কলা বাগান দিয়ে দৌড়ে পালাতে হয়েছে জওয়ানদের। আর দৌড়ে হাইওয়ের ওপর থেকে মোটরবাইক–টোটো–অটোতে লিফট নিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন ইডি অফিসাররা। এই ঘটনা নিয়ে এখন রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করেছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসার ও জওয়ানদের প্ররোচনাতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এদিকে সন্দেশখালির প্রত্যন্ত গ্রাম সরবেড়িয়ার কয়েক হাজার গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে অফিসার ও জওয়ানদের। জনরোষের মুখে পড়ে চম্পট দেন তাঁরা। আর এখানে তৃণমূল কংগ্রেস বা রাজ্য সরকার জড়িত নয় বলে জানানো হয়েছে শাসকদলের পক্ষ থেকে। দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এমন অবস্থা হওয়া কার্যত নজিরবিহীন। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে প্ররোচনা। দলের দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি গিয়েই এতো কাণ্ড। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে কুণাল ঘোষের পরামর্শ, ‘কোনও অবস্থায় কেউ কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। দলের নেতৃত্ব গোটা বিষয়টা দেখছেন। তারা যথাযথ সময়ে পদক্ষেপ করবে।’
অন্যদিকে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় বেধড়ক মার খেয়েছেন ইডির অফিসাররা। আর এজলাসে বসেই এই খবর জানতে পেরে কড়া পর্যবেক্ষণ জানান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘তদন্তকারীদের যেভাবে মারা হয়েছে, তাতে পরিষ্কার যে পশ্চিমবঙ্গে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আমি বুঝতে পারছি না, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কেন তা ঘোষণা করছেন না?’ এই মন্তব্যের পরই কুণাল ঘোষ বলেন, ‘উনি প্রশ্ন করার কে? ওনার নেতা সাজার ইচ্ছে হলে কলকাতা হাইকোর্টের বাইরে টুলে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখুন। চেয়ারটা বিচারপতির, কণ্ঠটা বিরোধীদের। কয়েকজন বিচারপতির জন্যই বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উনি মুখোশ পড়ে কেন খেলছেন?’
আরও পড়ুন: ‘নতুন রাজনৈতিক জীবনের জন্য আগাম শুভকামনা’, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে দেবাংশুর খোঁচা
এখানেই শেষ নয়। একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর চলেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লাইভ করেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। উদ্বেগেরও বটে। তবে এটার পিছনে রয়েছে প্ররোচনা। লাগাতার, ধারাবাহিকভাবে, কার্যত রোজ, শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসকে বেইজ্জত করবে বলে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় এজেন্সি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী তল্লাশির নামে গ্রামে ঢুকে প্ররোচনা দিচ্ছে। যেখানে বিজেপি আমাদের সংগঠনের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না, সেখানে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সেখানকার মানুষকে প্ররোচনা দিচ্ছে।’