বিজেপির নবান্ন অভিযানের মাঝপথে দেখা গিয়েছিল, দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করে দেন ‘নবান্ন অভিযান এখানেই শেষ’। তা নিয়ে দলের অন্দরে জোর শোরগোল পড়ে যায়। কারণ সুকান্ত মজুমদার প্রকাশ্যে রাস্তায় বলে বসেন, তাঁর আন্দোলন এখনও শেষ হয়নি। তখন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেরিয়ে আসে। এবার দিলীপ ঘোষের প্রশংসা করতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। আজ, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রীতিমতো তুলোধনা করে কুণালের মন্তব্য, ‘দিলীপের নখের যোগ্য নয় সুকান্ত–শুভেন্দু’।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল? নবান্ন অভিযানের দিন বঙ্গে বিজেপির তিন নেতার উপর দায়িত্ব ছিল মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী। আর তাঁদের তিনজনের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দিলীপ ঘোষের পারফরম্যান্স ভাল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এঁদের কারও ভূমিকা নিয়েই সন্তুষ্ট নয় বলে সূত্রের খবর। তবু সুকান্ত মজুমদারকে ফোন করেছিলেন অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডা। সেখানে আজ দিলীপ ঘোষের ধারেকাছে কাউকে রাখলেন না কুণাল ঘোষ।
ঠিক কী বলেছেন কুণাল ঘোষ? গোটা নবান্ন অভিযানকে ফ্লপ শো বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘ফ্লপ নবান্ন অভিযান। তারপর দিশেহারা বিজেপি। পুলিশ মার খেয়েছে কিন্তু, গুলি চালায়নি। বিজেপি কর্মীরা নেতাদের নির্দেশে হামলা করেছে। আমরা সারা বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের অনুরোধ করছি এই গুন্ডাদের দেখলে পুলিশে খবর দিন। দিলীপ ঘোষকে আবার অক্সিজেন দিচ্ছে দিল্লি। আর দিলীপ ঘোষকে টেক্কা দিতে না পেরে এরা জনজীবন বিপর্যস্ত করতে নেমেছে। মহিলা পুলিশের গল্প দিয়ে শুভেন্দু আত্মসমর্পণ করেছিলেন। নিজে লালবাজারে ছিলেন। পথে তাঁর নির্দেশে নেতা–কর্মীরা অশান্তি করেছে। রাজনৈতিক আদর্শ পৃথক হলেও বিজেপির যে কোনও কর্মসূচিতে দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি, তাঁর বক্তব্যের দিকে আমাদের নজর থাকে। তাঁকে গুরুত্ব দিই আমরা। কিন্তু বাকি নেতারা শুভেন্দু অধিকারী আর সুকান্ত মজুমদারদের কোনও গুরুত্ব নেই আমাদের কাছে। ওঁরা কেউ দিলীপবাবুর নখের যোগ্য নয়।’
কেন এমন মন্তব্য করলেন কুণাল? জানা গিয়েছে, বিজেপির নবান্ন অভিযানে মহিলা পুলিশের উপস্থিতি নিয়ে শোরগোল ফেলে প্রিজন ভ্যানে নিজেই উঠে গিয়ে ময়দান ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। সুকান্ত মজুমদার চিৎকার করলেও স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হন। তুলনায় দিলীপ ঘোষের মিছিলে দম দেখা যায়। যদিও সেটা বড় আকার নিতে দেয়নি পুলিশ। তারপরই দেখা গিয়েছিল লালবাজারে গিয়ে খশগল্পে মেতে উঠতে শুভেন্দু অধিকারী থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়–সহ কয়েকজনকে।