লোকসভা নির্বাচনের মুখে শাস্তি পেয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। সাধারণ সম্পাদক পদ চলে গিয়েছিল। কারণ বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা করেছিলেন খোলা মঞ্চ থেকে। যেখানে ওই কেন্দ্রে তাঁর দলের প্রার্থী ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুতরাং অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। এসে পড়েছে ৬টি বিধানসবা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। আগামী ১৩ নভেম্বর তা হবে। কিন্তু তার আগেই ফেরত পেলেন কুণাল পুরনো পদ। তবে একেবারে নিঃশব্দে। আজ সোমবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস নালিশ ঠুকতে যায় বিজেপির বিরুদ্ধে। তখন যে স্মারকলিপি জমা পড়ে তাতে দেখা যায় কুণাল ঘোষকে সাধারণ সম্পাদক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। চিঠি দিয়ে এই নালিশ করা হয়েছে। আর ওই চিঠিতে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে শশী পাঁজার নামের পাশে কুণাল ঘোষের নাম রয়েছে। সেখানেও লেখা রয়েছে জেনারেল সেক্রেটারি। তাই মনে করা হচ্ছে, কুণাল ঘোষকে ‘হারানো পদ’ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন দলের সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং কুণাল ঘোষ। আর সেখানেও ‘ফেস’ ছিলেন কুণালই। মুখপাত্রের পদ এখন তাঁর নেই। পদ কেড়ে নেওয়ার সময় বিবৃতি জারি হয়েছিল। কিন্তু ফিরল নিঃশব্দেই।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশে উপাচার্যদের নিয়োগ করবেন আচার্য, আবার জানাল সুপ্রিম কোর্ট
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সঙ্গে সামাজিক অনুষ্ঠানে মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তার সঙ্গে প্রশংসার জেরেই জেনারেল সেক্রেটারি পদ খোয়াতে হয়েছিল কুণাল ঘোষকে। তখন ডেরেক ও’ব্রায়েনের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস বিবৃতি জারি করে বলেছিল, ‘সম্প্রতি কুণাল ঘোষের অনেক কথা দলের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ওইসব কথা সম্পূর্ণভাবে তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’ তখন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছিল। সব মিলিয়ে দলের রোষানলে পড়ে পদ খোয়াতে হয়েছিল। সেটা আবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার বায়ো থেকে মুছে দিয়েছিলেন কুণাল।
এতকিছুর পর এমন নীরবে পদ ফেরত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কুণাল ঘোষ আরজি কর হাসপাতালের ইস্যু নিয়ে কার্যত একা লড়ে গিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। উপনির্বাচন নিয়েও তাঁর ভূমিকা প্রশংসণীয়। তাই নীরবে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। অপসারিত হওয়ার পর কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘যে পদ থেকে আমি নিজেই সরে গিয়েছি সেখান থেকে অপসারণ করার কোনও অর্থই হয় না।’ এখন অবশ্য এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আমি এখন একটা জগদ্ধাত্রী পুজোয় আছি। শান্তির জল নিচ্ছি। আমার কিছু বলার নেই।’