তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত মতকে খোঁচা দিয়েছিলেন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে ফুঁসে উঠেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সাংসদ সৌগত রায়, অপরূপা পোদ্দার–সহ অন্যান্যরা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কুণাল ঘোষ টুইট করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, অধ্যায় সমাপ্ত (‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’)। সঙ্গে একটি হাসির ইমোজি। এই টুইট থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে, কুণাল ঘোষের সঙ্গে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগ্যুদ্ধে ইতি পড়ল।
সূত্রের খবর, কুণাল–কল্যাণ বাগ্যুদ্ধ উপর মহল থেকে থামানো হয়েছে। কারণ না হলে দলের অন্দরে বিভাজন তৈরি হচ্ছিল। যেহেতু কুণাল আগ বাড়িয়ে কল্যাণের মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন তাই তাঁকেই সমঝোতার রাস্তায় হাঁটতে বলা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ের মধ্যে দলের অন্দরে কল্যাণ বিরোধিতা বেড়ে গিয়েছে। ঠিক হয়েছে, কারও কিছু বলার থাকলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে হবে। প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া চলবে না।
কয়েকদিন আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, আগামী দু’মাস সব রাজনৈতিক–ধর্মীয় কর্মসূচি বন্ধ রাখা উচিত। এটা অবশ্য তাঁর ব্যক্তিগত মত বলেও উল্লেখ করেছিলেন। এই নিয়েই বাঁধে বিতর্ক। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এই পদ সর্বক্ষণের। এখানে কোনও ব্যক্তিগত মতের জায়গা নেই। এটা সরসারি রাজ্য সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সামিল।
তার প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘দলের সর্বাধিনায়িকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই রয়েছেন অভিষেক। অভিষেকের মতো নেতা কিছু বললে দলের সাধারণ সৈনিক হিসেবে তা আমাদের চুপ করে শোনা উচিত। কোনও মন্তব্য করার আগে সব দিক ভেবে দেখা উচিত।’ পাল্টা জবাব দিয়ে কল্যাণ বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে নেতা বলে মানি না। যে যার পদে আছে, সেই পদকে সম্মান করি। কিন্তু নেতা বলে মানি না। অভিষেক যদি ত্রিপুরা আর গোয়া জিতিয়ে দেখাতে পারেন, তাহলে ওঁকে নেতা বলে মেনে নেব।’ এই পরিস্থিতিতে দু’পক্ষের বিরোধ মেটাতে আসরে নামেন এক প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ এবং এক মন্ত্রী। তাঁদের ফোনেই বিষয়টি আপাতত মিটেছে। এমনকী খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো বিষয়টি দেখতে বলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। গোলমাল মেটাতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান পার্থ বলে সূত্রের খবর।