সারাবছর খোঁজখবর রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের। আর দেখা হয় তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে ২১ জুলাই। মনটা ভরে যায় সাক্ষাৎ, গল্প এবং স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে। এই তো একটা দিন। যেখানে কাছে পাওয়া যায় দিদিকে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এই নিয়ে টানা দু’বার দেখা হবে না দিদির সঙ্গে! তাই মন ভালো নেই বরানগরের ব্যানার্জি পাড়ার রায় পরিবারের। আজ ২১ জুলাই পালন হচ্ছে। বাংলার পাশাপাশি ভিন রাজ্যের মানুষও শুনতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমোর কন্ঠস্বর। ভার্চুয়ালি এই সভা হাইভোল্টেজ হলেও কাছে পাওয়া যাবে না সবার দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কেটে গিয়েছে আড়াই দশকেরও বেশি সময়। তারপরও তরতাজা হয়ে রয়েছে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই তাঁদের হৃদয়ে। ১৩ জন শহিদের অন্যতম বিশ্বনাথ রায়ের স্ত্রী মিতালী রায়, পুত্র রাজীব রায়–সহ পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যেক বছর ২১ জুলাই এলেই তাঁদের মনের কোণে বিষন্নতার কালো মেঘ ছেয়ে যায়। তবে বারবার আন্তরিকতার ছোঁয়া পড়তো মমতা দিদির সঙ্গে দেখা করার পর। দু’বছর হলো সেটা অতীত হয়ে গিয়েছে করোনাভাইরাসের জন্য।
এই দিনটিতে সকালে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি যাওয়া হতো। সেখান থেকে নেত্রীর সঙ্গে শহিদ মঞ্চে আসা। আজ কোনও কিছুই হচ্ছে না। এক প্রিয়জনকে হারানোর দিনে আরেক প্রিয়জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ার ব্যথা অনুভব করছেন বিশ্বনাথ রায়ের পরিবার। কিন্তু দিদি অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য কর্তব্যে খামতি রাখেননি। তাই তো তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংসদ দোলা সেনকে বাড়িতে পাঠিয়েছেন নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বনাথ রায়ের পরিবারের কাছে। প্রতিবারের মতো এবারেও বিশ্বনাথ রায়ের স্ত্রীকে শাড়ি, নীল সাদা উত্তরীয় পাঠিয়েছেন বরানগরের ব্যানার্জি পাড়ায় বাড়িতে। বাড়ি এসে খোঁজ নিয়েছেন বরানগর পুরসভার মুখ্য প্রশাসক অপর্ণা মৌলিক এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কো–অর্ডিনেটর অনিন্দ্য চৌধুরী।
এই বিষয়ে মিতালী দেবী বলেন, ‘মমতা দিদিই আমাদের সব। দিদি না থাকলে কোলের সন্তান নিয়ে শেষ হয়ে যেতাম। ১৯৯৩ সালের পর পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন দিদি। এবার দেখা হবে না তাই খারাপ লাগছে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি চিঠি পাঠিয়েছেন মিতালী দেবীর কাছে। যেখানে একুশে জুলাই ভার্চুয়ালি করার কথা জানিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। ২০২২ সালে সব স্বাভাবিক হলে একুশে জুলাই পালন হবে আগের মতো করেই।