রাজ্য–রাজনীতিতে একদা তিনি ছিলেন চাণক্য। তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে কলকাতা পুরসভা নির্বাচন এবং সর্বোপরি রাজ্যে পরিবর্তন আসার পিছনে তাঁর হাত যে ছিল তা এখনও মানেন শাসক–বিরোধী দলের নেতা–মন্ত্রী রা। কিন্তু সেই চাণক্য এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সব ভুলে গিয়েছেন। কিছুই মনে নেই তাঁর। হ্যাঁ, তিনি মুকুল রায়। প্রায় ৬ মাস ধরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুকুল রায়। চলতি বছরের জুলাই মাসে বাড়িতে পড়ে গিয়ে চোট পান মুকুল রায়। তখন থেকেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই দুঁদে রাজনীতিবিদ। এখন কেমন আছেন? জানতে চান সকলে।
এই মুকুল রায় একুশের নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ওই নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তারপর আবার ফিরে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসে ফলাফলের পর। তার কদিন পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকুল রায়। এবার এই অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা নিয়ে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় বলেন, ‘উনি এখনও হাসপাতালেই ভর্তি আছেন। রাইস টিউবে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে। কোনও সেন্স নেই। হাত–পা নাড়াতে পারছেন না। কাউকে চিনতে পারছেন না। ডাক্তার বলছে, রিকভারি করার চান্স অত্যন্ত কম। অলমোস্ট ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’ এই খবর জানিয়েছে আজতক বাংলা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়লেন বিধায়ক উত্তম, দলীয় বৈঠকে নিঃশব্দ বিপ্লব করলেন
জুলাই মাসে বাড়ির বাথরুমের সামনে পড়ে যান মুকুল। তখন তাঁর মাথায় রক্তপাত হয়। এই ঘটনার পর অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এই কথা জানান পুত্র শুভ্রাংশু। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মুকুল রায়ের মাথায় অস্ত্রোপচার করানো হয়েছিল। তখন তাঁর মস্তিষ্কে একটি চিপ বসানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসাবে উঠে এসেছিলেন মুকুল রায়। এই মুকুল রায়ই রাজ্য–রাজনীতিতে একবার সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন।
মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন বিরোধী থেকে শাসক হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পর পর নির্বাচনে জিতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন তৃতীয়বার বাংলার কুর্সিতে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর পর নির্বাচনে দায়িত্ব সামলেছেন মুকুল রায়। তারপর গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু থেকেই দলে ছিলেন মুকুল রায়। বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য আলোড়ন ফেলে দেয় রাজ্য–রাজনীতিতে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই মুকুল রায় অনেকটা ভেঙে পড়েছিলেন। তারপর থেকেই ছন্দপতন। এই খবর জানিয়েছে আজতক বাংলা।