শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষ হুগলির যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আর সায়নী ঘোষ যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী। তাই দলের নানা অনুষ্ঠানে একাধিকবার তাঁদের একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। আর কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে পুরনো ছবিকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি। এমনকী বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দাবি করেন, সায়নী–কুন্তলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। এই দাবি করার সঙ্গে সঙ্গেই পালটা সৌমিত্রকে আইনি নোটিশ পাঠালেন সায়নী ঘোষ। আর সেখানে বলা হয়েছে, আগামী সাতদিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে সৌমিত্রকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি’র জালে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে মন্তব্যের জেরেই এই নোটিশ বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে এই নিয়ে একটি টুইট করেছেন সায়নী ঘোষ। সেখানে সায়নী লিখেছেন, ‘আমি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ শেয়ার করলাম। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রকাশ্যেই একটি মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের জেরেই এই নোটিশ। তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’ বিজেপি বারবার কুন্তলের গ্রেফতার হওয়াকে হাতিয়ার করে কিছু না কিছু টিপ্পনি করেই চলেছে। কয়েকদিন আগে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দাবি করেন, সায়নী ঘোষ এবং কুন্তল ঘোষ শুধুমাত্র রাজনৈতিক সহকর্মীই নন। তাঁদের দু’জনের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কও রয়েছে। এমনকী এটা তদন্ত করলে সামনে আসবে বলেও দাবি করেন সৌমিত্র। তার আগে বিজেপি নেতা–নেত্রীরা কুন্তল–সায়নীর একই মঞ্চে থাকা ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন।
অন্যদিকে শুক্রবার বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির হন সৌমিত্র খাঁ। আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন। সেখানে এমন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গ ওঠে। তখনই বলতে গিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘সায়নী ঘোষ নাচতে নাচতে সবার বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিছুদিন আগে তিনি মহাদেবকে নিয়েও অশালীন মন্তব্য করেছিলেন। কুন্তল ও সায়নীর কোনও অবৈধ সম্পর্ক আছে কিনা, তারও তদন্তের প্রয়োজন।’ এই মন্তব্যের জেরেই আইনি নোটিশ পাঠালেন সায়নী ঘোষ। এমনকী তাঁকে প্রকাশ্যেই ক্ষমা চাইতে হবে বলে তিনি নোটিশে দাবি করেছেন।
এছাড়া ছবি নিয়ে বারবার সায়নী ঘোষ নিজের মতামত স্পষ্ট করেছেন। একজন যুবনেতা এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীর পুরনো কোনও অনুষ্ঠানের ছবি থাকতেই পারে বলে জানান তিনি। কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর সায়নী ঘোষ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কুন্তল ঘোষকে আমি চিনি না এটা আমি বলব না। প্রচুর ছবিতে আমার সঙ্গে ওঁকে দেখা গিয়েছে, সেটাও আমার অজানা নয়। তবে আমাদের প্রত্যেকদিনই প্রচুর মানুষের সঙ্গে দেখা করতে হয়। অনেকেই এসে আমার সঙ্গে ছবি তোলেন। সবাইকে চেনা সম্ভব নয়। তবে কুন্তল আমাদের যুব সংগঠনে রয়েছেন। তাই ওঁকে আমি চিনি।’