কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক ভাল নয়। নানা ইস্যুতে বৈরিতা লেগেই আছে। আর তার জেরে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা–সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে বারবার আন্দোলনে নেমেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে ধরনায় বসে ছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলন নয়াদিল্লির কৃষি ভবনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও গরিব মানুষের টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এবার এই বকেয়া পাওনার দাবিতে সরব হলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। শরিকদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এনডিএ সরকার। আগামী জুলাই মাসে এই নতুন সরকারের নেতৃত্বে সংসদের বাদল অধিবেশন হবে। তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা হবে। এই বিষয়ে শনিবার সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে প্রাক বাজেট বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানেই বাংলার বকেয়া আদায়ের দাবিতে সরব হন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বাংলাতেও এবার ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তৃণমূল কংগ্রেস দারুণ ফল করেছে। তাই চাপে আছে বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্ব। আর তা নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।
আরও পড়ুন: বাংলায় আবার উঠে এল জঙ্গিযোগ, এসটিএফের গোপন অভিযানে গ্রেফতার একাধিক
এমন আবহে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর সরব হওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সব দিক থেকেই ব্যাকফুটে আছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলার বকেয়া টাকাও মেটায়নি। আবার লোকসভা নির্বাচনেও বাংলায় আসন পায়নি। এই পরিস্থিতিতে পরিসংখ্যান তুলে ধরে বৈঠকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করার পরেও ৬৯ লক্ষ শ্রমিকের মজুরির টাকা ২০২১ সাল থেকে আটকে রাখা হয়েছে। আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক অনুমোদন দিলেও এখনও সেই টাকা দেওয়া হয়নি। এমনকী সর্বশিক্ষা অভিযান, খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প, স্বাস্থ্য মিশনের টাকাও আটকে রাখা হয়েছে।’
এখানেই শেষ নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রেও রাজ্যের ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে বৈঠকে সুর সপ্তমে তোলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেওয়ার পরেও পরবর্তী কিস্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে না। স্বাস্থ্যখাতেও রাজ্যের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। অবিলম্বে বকেয়া মেটানো হোক। আমরা সিঙ্গল ইঞ্জিন সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্য নিজের মতো করে এগিয়ে চলেছে। ২০১১ সালে রাজ্যে জিএসডিপি ছিল ৪ লক্ষ কোটি টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ১৭ লক্ষ কোটি টাকা।’