এখন রাজ্য–রাজনীতিতে আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে সিঙ্গুর ইস্যু। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাটা গোষ্ঠীকে তাড়াননি বলে মন্তব্য করেছেন। এমনকী টাটাকে তাড়ানোর দায় তিনি সিপিআইএমের উপরই চাপিয়েছেন। এই নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনায় নেমে পড়েছে। ঐতিহাসিক সিঙ্গুর আন্দোলন রাতারাতি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল এত বছর পর। সেটাকে এবার ইন্ধন জুগিয়েছেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এখন তিনি বিজেপিতে। যদিও তাঁর জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।
ঠিক কী বলেছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য? এই সিঙ্গুর ইস্যু নিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক তথা মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সিপিএমের জন্যই টাটারা চলে গিয়েছিল, তাতে আমি সহমত নই। তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সামনে শাসক–বিরোধীর যে চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। সম্ভবত সেই জন্য মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিপিএম টাটাদের তাড়িয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঠিক বলছেন না। কারণ, সেই চুক্তির কপি কখনও টাটাদের কাছে পৌঁছয়নি। কারখানার গেটের সামনে ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনার জেরেই টাটারা সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যান।’
ঠিক কী বলেছেন ফিরহাদ হাকিম? রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মন্তব্যের পাল্টা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মাস্টারমশাইয়ের বয়স হয়েছে। কী বলছেন উনি জানেন না। সেই সময় উনি তো আমাদের সঙ্গেই আন্দোলনে ছিলেন। মাস্টারমশাই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। এই বয়সে ওঁর বিশ্রাম নেওয়া উচিত।’ সুতরাং বয়সের ভারে তিনি ভুলে গিয়েছেন, না হলে স্বজ্ঞানে তিনি বলছেন না এটাই বোঝাতে চেয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী। এখন এই মাস্টারমশাই বিজেপিতে। একুশের নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়ে হেরেছেন।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে বুধবার বলেছিলেন, ‘কেউ কেউ বাজে কথা বলছে, টাটাকে আমি তাড়়িয়েছি। আর টাটা চাকরি দিচ্ছে। টাটাকে আমি তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে। পলিটিক্যাল কথা এখানে বলতে চাই না। আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। আমরা জমি ফেরত দিয়েছি। জায়গার তো অভাব নেই। আমি জোর করে কেন জমি নেব? আমরা এত প্রোজেক্ট করেছি। কিন্তু জোর করে জমি তো আমরা নিইনি। আমি পরিষ্কার বলি এখানে যত শিল্পপতি আছে কোনও বৈষম্য নয়। আমরা চাই বাংলায় তাঁরা ইনভেস্ট করুন। এখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন।’