বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানভঞ্জনের চেষ্টায় এবার কোমর বেঁধে নেমে পড়লেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আগেই জানা গিয়েছিল যে রবিবার সকালে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সে অনুযায়ী এদিন বেলা ১২টা নাগাদ এ সংক্রান্ত বৈঠক শুরু হয়েছে তৃণমূলের সহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রশমনে বৈঠকে ডাকা হয়েছে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকেও। তিনি এদিন বেলা ১১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছন। আর বেলা ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ সেখানে হাজির হন রাজীব। এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরেই চলবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। আজই রাজীব–সমস্যার সমাধান সূত্র বের করতে মরিয়া তৃণমূল।
নিয়মিত নিজের দফতরে গেলেও কয়েকদিন ধরেই দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে একের পর এক বেসুরো মন্তব্য করে গিয়েছেন তিনি। দলের প্রতি ক্ষুব্ধ শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যে মন্ত্রিত্ব–সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়েছেন। তার পর বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিপাকে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এমন সময়েই শুভেন্দুর কায়দায় রাজীবের নামে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ফ্লেক্স, পোস্টার পড়ায় জল্পনা বাড়ছিল।
শুক্রবার হুগলির কামারপুকুরে পুরোহিতদের একটি সভায় যোগ দিয়ে এক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব। তিনি রামকৃষ্ণের বাণী আউরে বলেন, ‘ঠাকুরের কথায়, যত মত, তত পথ। যত মত থাকবে, পথও ভিন্ন ভিন্ন হবে। যদি কোথাও মনে হয়, মানুষের কাজ করার জন্য এই মতে অসুবিধা হচ্ছে, তবে অনেক পথ খোলা আছে। সেই পথ থেকে কেউ কাউকে সরাতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।’
এর আগেও দলে তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রাজীব। এক অরাজনৈতিক জনসভায় তিনি জানিয়েছিলেন, দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না। দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্তাবকরা দলের সামনের সারিতে। এখন হচ্ছে, স্তাবকতার যুগ। অর্থাৎ আমি ভাল বললে ভাল বলতে হবে। আমি খারাপ বললে খারাপ বলতে হবে। অর্থাৎ শুধুমাত্র হ্যাঁ–তে হ্যাঁ, না–তে না— এটুকু বলতে পারলেই তুমি ভাল। নয়তো তুমি খারাপ।’