বাংলায় অব্যবহৃত জমি ফেলে রাখা যাবে না বলে আগেই নির্দেশিকা জারি করেছিল নবান্ন। সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে লিজে দেওয়া জমি বহুদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যেটা ফেলে রাখতে চায় না নবান্ন। তাই ওইসব জমি বাংলার উন্নয়নে ব্যবহার করতে ফেরত নেওয়ারই পরিকল্পনা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় মালিকানার পাঁচটি বন্ধ চটকলের জমি ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য শ্রম দফতর। তার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের মন্ত্রী। যা নিয়ে সংঘাত দেখা দিতে পারে।
ঠিক কী চান মলয় ঘটক? এই পড়ে থাকা জমিগুলির বাজার দাম কয়েকশো কোটি টাকা। বন্ধ কারখানাগুলিতে বিকল্প বিনিয়োগের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। এবার মলয়বাবু দ্বিতীয় একটি চিঠিও লিখেছেন গোয়েলকে। সেটি অপর কেন্দ্রীয় সংস্থা জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (জেসিআই) নিয়ে। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে বাংলা থেকে কাঁচা–পাট কেনার ক্ষেত্রে জেসিআইয়ের ভূমিকা একদশক ধরে অত্যন্ত খারাপ। তাই রাজ্যে জেসিআইয়ের ১১০টি বিপণন কেন্দ্রকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাট কেনার উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে রাজ্যের চিঠিতে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সাংসদ অর্জুন সিংয়ের অঙ্গুলিহেলনে এমন কাজ হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সংস্থা এনজেএমসির অধীনে রাজ্যে ন্যাশনাল, আলেকজান্দ্রা, ইউনিয়ন, খড়দা এবং কিনিসন নামে পাঁচটি বড় মাপের চটকল ছিল। এখন সেগুলি বন্ধ। ১৯৯৩ সাল থেকে সেগুলি চলে গিয়েছে বিআইএফআরে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাই এনজেএমসি বন্ধে সিলমোহর দিয়েছিল। এই কারখানাগুলির পরিকাঠামো এবং বিপুল পরিমাণ জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ওই জমির সবটাই দীর্ঘমেয়াদি লিজে এনজেএমসি’কে রাজ্যই দিয়েছিল। এবার তা ফেরত চাওয়া হয়েছে।
বিকল্প প্রস্তাব ঠিক কী? কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে পাঠানো চিঠিতে মলয়বাবু কিছু বিকল্প প্রস্তাব রেখেছেন। চিঠির শুরুতেই তিনি উল্লেখ করেছেন, মিলগুলির কব্জায় থাকা জমি রাজ্যকে হস্তান্তর করা হোক। রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে এই জমি ব্যবহার করা হবে। এইসব জমিতে জুট বা টেক্সটাইল পার্ক, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার–সহ নানা জিনিস তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে। যদি এই চিঠির পর কোনও প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর থেকে পায়নি রাজ্য। যা নিয়ে নবান্নে জোর আলোচনা চলছে।