মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছিলেন তিনি। বিধানসভায় শোকজ চিঠির বিষয়টি মিটিয়ে নেবেন ঠিক করেছিলেন। কিন্তু দুয়ারের চৌকাঠে পা রাখতেই মুখ্যমন্ত্রীর রুদ্রমূর্তি দেখেছিলেন তিনি। তার আগে পর্যন্ত বিদ্রোহী মেজাজে ছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। এমনকী রাজনীতিতে তিনি যে কাউকে ভয় পান না সুর চড়িয়ে সে কথা বলেছিলেন। দলের নানা বিষয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করতেন। তাই জুটেছিল শোকজ চিঠি। যা মিটিয়ে নিতে চুপিসারে ঢুকে পড়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। তখনই কড়া বার্তা আসে। আর তাতে কাজ হয়। আজ, মঙ্গলবার ভুল স্বীকার করলেন ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
চিঠির জবাব ঠিক সময়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। দলের মধ্যে অনেক নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে করে–কম্মে খাচ্ছে এমন অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। তাঁকে শোকজ চিঠি দেওয়া হলে কেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হবে না? এমন প্রশ্নও তুলেছিলেন তিনি। আর সেখানে আজ, মঙ্গলবার হুমায়ুন কবীরই বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা। এই নিয়ে কোনও বক্তব্যই নেই, কোনওদিন ছিলও না। এখন বিধায়কদের সমস্যা জানানো জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। ফলে আর সমস্যার কিছু নেই। ওই গ্রুপেই সমস্যার কথা জানাবো।’
আরও পড়ুন: নবান্নে যাচ্ছেন মহম্মদ সেলিম, মুখোমুখি হবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে, আজ কেন যেতে হচ্ছে?
কিন্তু তাহলে এত বিদ্রোহ করলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি হুমায়ুন কবীর দেননি। তবে এই ঘটনায় রাজ্যের মানুষকে তিনি হাসিয়েছেন। একবার বাঘের মতো গর্জন করে পরে বিড়ালের মতো আওয়াজে থামলেন। এটাই হাস্যকর। শোকজের জবাব আগে দিতে হবে বলে বিধানসভায় হুমায়ুনকে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী তখন হুমায়ুনকে বলেন, ‘তোমাকে এত কথা বলতে কে বলেছে? আগে শোকজের চিঠি দেবে তারপর কথা হবে।’ পরিস্থিতি যে বেগতিক এই বক্তব্য থেকে বুঝতে পেরেছিলেন হুমায়ুন কবীর। এবার অবশেষে নিজের ভুল স্বীকার করলেন তিনি।
এছাড়া আর হাতে ১৫ মাস আছে। তারপরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। ২০২৬ সালের বিধানসভায় টিকিট না পেলে হুমায়ুন কবীরের নামের আগে প্রাক্তন বিধায়ক তকমা সেঁটে যাবে। সেটা একেবারেই চাইছেন না ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। তাই ঢোঁক গিলে নিলেন তিনি। আর সুর নরম করে রাজনীতির পথে এগোতে চাইলেন। তাই হুমায়ুন কবীরের কথায়, ‘আমি কেন, কেউ কোনওদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাজ, ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। আমিও তুলিনি। বাকি যা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তা মেটানোর ব্যবস্থা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সপ্তাহে একটা দিন বিধায়করা যাবতীয় অভিযোগ জানাতে পারবেন।’