নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে। তারপর থেকে টানা ২৩ মাস জেলবন্দি ছিলেন। হ্যাঁ, তিনি পলাশীপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেল থেকে মুক্তির পরই নিজের বকেয়া ওই বিধায়ক ভাতার জন্য বিধানসভায় আবেদন করে বসেন মানিক। আসলে এখন বিধায়ক ভাতা মুখ্যমন্ত্রী বাড়িয়ে দেওয়ায় তা লাখে পৌঁছেছে। সেটা ছাড়তে চান না মানিক। সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী, বেতন পাওয়ার কথা নয় মানিকের। আবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায় তা নিয়ে রুল জারি করেননি। সুতরাং বকেয়া বেতন পাওয়ার বিষয়টি ঝুলেই রইল মানিকের ভাগ্যে।
এদিকে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলেই ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। জেলে যে সময় মানিক ছিলেন সে সময়ের বেতন চেয়ে বিধানসভায় দরবার করেন মানিক। এবার এই বিষয়টি নিয়ে শুনানি করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ শুনানির পর বিধানসভার অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, জেলে থাকার সময়ের বিধায়ক ভাতা পাবেন না মানিক ভট্টাচার্য। অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) পরামর্শ নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, এসব ক্ষেত্রে ভাতা পাবেন না সংশ্লিষ্ট বিধায়ক।
আরও পড়ুন: ‘পার্থর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি’, রাজ্যপালকে চিঠি বিজেপি সাংসদের
অন্যদিকে মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। দীর্ঘ সময় তিনি জেলে ছিলেন। সদ্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন বিধানসভার টিএ–ডিএ বিভাগে জমা দেন চিকিৎসা সংক্রান্ত একাধিক বিল। তার সঙ্গে জেলে থাকাকালীন সময়ের বকেয়া বেতনের আর্জিও জানান মানিক। বারবার এই আবেদনের পর এজির পরামর্শ চান বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এজি সরাসরি স্পিকারকে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী জেলে থাকার সময়ের বেতনের অর্থ পাবেন না মানিক ভট্টাচার্য। এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর চর্চা চলে বিধানসভার অন্দরে। দীর্ঘ শুনানির পর মানিকের আবেদন খারিজ করা হয়। অধ্যক্ষ জানান, নজিরবিহীন এই অর্ডার সংরক্ষিত করে রাখা হল।
এছাড়া বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের সঙ্গে। জেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্দি থাকার সময় মানিকবাবুর জন্য বাইরে থেকে কিছু ওষুধ আনতে হয়েছে। বিধানসভায় বিল পাঠালে সেই ওষুধের টাকা মিলবে। নিয়ম অনুযায়ী, বিধায়করা তাঁর অথবা স্ত্রীর চিকিৎসায় হাসপাতালের বিল বিধানসভায় জমা দেওয়ার সুযোগ পান। সেই টাকা বিধায়করা ফেরতও পান। অতীতে বহু বিধায়কের বেশ জটিল রোগের চিকিৎসার খরচও বহন করেছে বিধানসভা। এই বিলের ক্ষেত্রে কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। শুধুমাত্র চশমার ক্ষেত্রে খরচের উর্ধ্বসীমা ৫ হাজার টাকা। আজ প্রায় একঘণ্টার বেশি শুনানি হয়। তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে অর্ডার দেননি স্পিকার।