জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল হয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসার পর থেকেই শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সংঘাত দিনের পর দিন বাড়ছে। রাজ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করাতে বদ্ধপরিকর রাজ্যপাল বরাবরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আইন–শৃঙ্খলার অবনিতর অভিযোগ তুলেছেন। এবার সেই রাজ্যপালের সঙ্গেই দেখা করলেন শাসকদলের অন্যতম নেতা তথা বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তৃণমূলে বর্তমান যা দলবদল বা দলত্যাগের পরিস্থিতি তাতে এই সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে।
এদিন এই সাক্ষাতের ব্যাপারে জানিয়ে একটি টুইটও করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি সেই টুইটে লিখেছেন, ‘আজ রাজভবনে এসে আমার সঙ্গে বালি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া দেখা করেছেন। তিনি প্রশাসনিক বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে এদিন আমার সঙ্গে আলোচনা করেছেন।’ এর পরই রাজ্য রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনিক ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্যপালের কাছেই কেন? দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে কেন গেলেন না বৈশালী? কারণ, দলেরই নেতামন্ত্রীরা রাজ্যপালকে ‘বিজেপি–র নেতা’ হিসেবে বহুবার কটাক্ষ করেছেন।
তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দলের একাংশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বৈশালী ডালমিয়া। সম্প্রতি বাদামতলা–সহ বালির একাধিক জায়গায় বৈশালীকে আক্রমণ করে একাধিক পোস্টার দেখা গিয়েছে। নামহীন ওই পোস্টারে লেখা, ‘মাননীয়া দিদির কাছে বালির সক্রিয় তৃণমূল কর্মীদের অনুরোধ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বালিতে কোনও বহিরাগত নয়, বালির মানুষকেই দলের প্রার্থী হিসেবে চাই’। আর এর জবাবে বৈশালী ডালমিয়া বলেছিলেন, ‘আমি বহিরাগত নই। আমার নিজের নামে বালিতে বাড়ি রয়েছে। যাঁরা পোস্টার লাগিয়েছেন তাঁরা প্রধানমন্ত্রী এ রাজ্যে এলে তাঁকেও বহিরাগত বলেন। এই সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিত।’
আর এর পর এদিন বিজেপি–ঘনিষ্ঠ বলে অভিযুক্ত রাজ্যের রাজ্যপালের সঙ্গে বৈশালী ডালমিয়ার সাক্ষাৎ ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। কী নিয়ে তিনি এদিন আলোচনা করলেন তা অবশ্য জানা যায়নি। কিন্তু তৃণমূলের বর্তমান পরিস্থিতি এ ধরনের একটি বৈঠক যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।