তাঁদের শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তারপর শপথগ্রহণ হয় তাঁদের। আর তা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। কিন্তু তারপর অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। বাংলার মানুষও ওই শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কথা ভুলে গিয়েছিলেন। তবে রাজ্য–রাজনীতির পাকে–চক্রে আবার তা সামনে চলে এল। নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। মিষ্টি সম্পর্ক কি তেতো হতে শুরু করেছে? উঠছে প্রশ্ন। কারণ বিধানসভায় সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছিল। আর এখন সেটাকে রাজভবন মান্যতা দেয়নি। উলটে ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা সেঁটে দিয়েছে রাজভবন।
বিষয়টি এখানেই শেষ নয়, এই দুই বিধায়ককে এবার রাজভবনের পক্ষ থেকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই নোটিশে রাজভবনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, সংবিধানের নিয়ম মেনে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেটা মানা হয়নি। সুতরাং যা সংবিধান মেনে হয়নি তা অসাংবিধানিক। এটাই বলতে চেয়েছে রাজভবন। এই ঘটনা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সদ্য ২৬ জানুয়ারি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন এই বিষয়ে রাজ্যপাল কোনও ইঙ্গিত দেননি বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যজুড়ে আমরা ৭টি পেঁয়াজ গোলা তৈরি করছি’, বড় ঘোষণা করলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী
এবার আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে বিধানসভায় অধিবেশন শুরু হচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বাজেট। সেখানে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আমন্ত্রণ করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মুখেই জানিয়ে ছিলেন। আর এই বিধানসভার অধিবেশনের প্রাক্কালে এবার শপথ নিয়ে আইনি নোটিশ পেয়েছেন বরানগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার। শপথগ্রহণ নিয়ে তখন যে অভিযোগ এবং বক্তব্য রাখা হয়েছিল সেটা ভালভাবে নেয়নি রাজভবন। আর তার ফলস্বরূপ এমন প্রত্যাঘাত এল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজভবনে যেতে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে। এমন অভিযোগ তুলেছিলেন স্বয়ং বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও যে নিরাপদ বোধ করছেন না সে কথা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখেই। বিধানসভায় সংবিধানপ্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে বসে ধরনা দিতে দেখা গিয়েছিল এই দুই বিধায়ককে। আর এখন সেই শপথ নিয়েই আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে এই দুই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে। যা এখন বড় খবর। বিধায়ক সায়ন্তিকা এবং রেয়াত জানান, তাঁরা মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আইনি নোটিশ নিয়ে তাঁরা বিধানসভার স্পিকার এবং দলের নেতৃত্বকে সব জানিয়েছেন। দলের নির্দেশ মতোই তাঁরা চলবেন। গতকাল বিধানসভায় এসে এই বিষয়টি নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেন দুই বিধায়ক। তার পর আইনি নোটিশটি সম্পর্কে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককেও জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।