আজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী থেকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সোচ্চার হন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। তিনি সরাসরি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্বকে আক্রমণ করেন। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এই সমাবেশের পর অভিষেক যাবেন মুম্বইয়ে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগ দেবেন ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে। তার আগে এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী সাংগঠনগুলি সিসিটিভি লাগানোর বিরোধী। সেখানে তিনি সিসিটিভি লাগাবেন বলেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। এখন যিনি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তিনি চাপে পড়ে সিসিটিভি লাগানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। তবে তা লাগাতে যে বিপুল টাকা লাগবে তা কোথা থেকে আসবে? এই প্রশ্নও তুলেছেন। সেখানে আজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা আসলে বংশের রোগ। ওদের দাদুরা ছিল কম্পিউটারের বিরোধী। বাবারা ছিল ইংরেজি শিক্ষার বিরোধী। আর ছেলেরা হয়েছে সিসিটিভি লাগানোর বিরোধী। আমি এখান থেকে বলে যাচ্ছি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি লাগাবই। কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
তবে এটা যে করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের কথাও জানিয়েছেন প্রকাশ্যে। অভিষেকের কথায়, ‘সিসিটিভি ওখানে লাগানো হবেই। আর কোনও ছাত্রের প্রাণ আগামী দিনে এভাবে যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওখানে সিসিটিভি বসবে। ছাত্র সমাজের কাছে আমার বার্তা, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হযে লড়াই করতে হবে। সৌভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তুলতে হবে। হিংসা নয়। অন্যায়, অপরাধের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে। আর র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাসই অঙ্গীকার, আমরা সিসিটিভি লাগাবই। আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই অ্যান্টি র্যাগিং হেল্প লাইন চালু করেছে। সেটা সারা বাংলায় প্রযোজ্য।’
আরও পড়ুন: দত্তপুকুর বিস্ফোরণে ক্রমাগত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, কোথায় গিয়ে থামবে সেটি?
তবে এরপরই তিনি বিজেপির উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন। আর নাম না করে বিরোধী দলনেতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। কারণ সম্প্রতি টুইট যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। ইডির প্রেস বিবৃতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে অভিষেককে জ্ঞান দিয়েছিলেন। আজ তারই উত্তর দিলেন অভিষেক। অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘মিডিয়ার লোকজন তদন্ত করে না। মানুষকে কলুষিত করেন। এটা র্যাগিং নয়? কোনও বাপের ব্যাটা থাকলে বলুক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে মৃত্যুবরণ করব। আমাদের ধমকে লাভ নেই। আমি যেদিন ফিরলাম। তার পরের দিন ইডিকে পাঠিয়েছে রেড করতে। তল্লাশি করেছে তার সঙ্গে সঙ্গে ষোলাটা ফাইল কম্পিউটারে ডাউনলোড করে দিয়ে চলে এসেছে। আমি বলছি এই ফাইলটাই যদি কয়েকদিন পর ইডি–সিবিআই পেত তাহলে এই সংবাদ মাধ্যম বলত অভিষেকের অফিস থেকে কলেজের লিস্ট পাওয়া গিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনও প্রমাণ থাকে ইডি–সিবিআই নয়, ফাঁসির মঞ্চ করো। প্রাণ দেবো। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমায় বনগাঁয় ঠাকুর বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। ওদের অনুমতি নিয়ে মন্দিরে ঢুকতে হবে। সুব্রত ঠাকুর নিজের বুথে হেরেছে। দিলীপ ঘোষ নিজের বুথে হেরেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি নিজের বুথে হেরেছে। শুভেন্দু অধিকারী পুরসভা ভোটে নিজের বুথে হেরেছেন।’