কলকাতা হাইকোর্ট একের পর এক সাড়া জাগানো রায় দিয়ে চলেছে। এই টানটান পরিস্থিতিতে আইনজীবী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ফিল্মি কায়দায় প্রবেশ করলেন আদালতে। আর তারপরই শুরু হয় গম্ভীর গলায় সওয়াল। শুক্রবার হঠাৎ এমন প্রবেশে সবাই হকচকিয়ে যান। তারপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন ছিল শোনার মতো।
ঠিক কী বলেছেন আইনজীবী কল্যাণ? এজলাসে দাঁড়িয়ে কল্যাণ বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, ‘মাই লর্ড, আমায় জেলে ঢুকিয়ে দিন।’ এই শুনে চমকে যান বিচারপতি। তখন তিনি বলেন, ‘কী বলছেন? আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি। আপনি তো শুনেছি মা কালীর ভক্ত।’ জবাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শুধু কালী নয়। আমি রামেরও ভক্ত। দিনে দু’বার হনুমান চাল্লিশা পড়ি। আমি যাঁদের জন্য করেছি তাঁদের কাছে এখন খারাপ। আর যাঁদের জন্য করিনি, তাঁরাই এখন আমায় ভালো বাসেন।’
এইসব কথা শুনে হতবাক হয়ে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরই তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সেখানেই তিনি বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেলে ঢোকাব সেটা যদি আদালতের মাইন্ডসেট হয়ে থাকে, তবে আপত্তি নেই। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে? বাগ কমিটির কাছে কেউ এসে বলেনি, টাকা নেওয়া হয়েছে। এই আর্থিক লেনদেন বিষয়টি অনুমান করা হচ্ছে। হাইকোর্ট খুব বেশি হলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। কাকে ডাকা হবে, সেটা কোর্ট ঠিক করবে না তদন্তকারী সংস্থা? আদালত বলতে পারে কি, হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ দরকার? কোর্ট মনিটর তদন্ত হয়।’
পাল্টা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়ালের প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। আমি আমার মত প্রকাশ করেছি। এসএসসি’র উপদেষ্টা কমিটিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওএসডি এবং পিএ ছিলেন। তাঁরা সরাসরি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রিপোর্ট করতেন। তাই এই কমিটির বিষয়ে পার্থবাবু কিছু জানতেন না, এটা আমি বিশ্বাস করি না।’