সদ্য ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে সোচ্চার হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য সাসপেন্ড হতে হয়। এবার দলের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের একাংশ মন্ত্রীকে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁদের চালচলন থেকে শুরু করে জীবনযাপন নিয়ে খাপ্পা কল্যাণবাবু। আর সেই কথা প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে বলে দেওয়ায় রাজ্য–রাজনীতিতে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দলের অস্বস্তিও বেড়েছে। এখন কেমন করে ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যায় সেটাই দেখার।
কিন্তু হঠাৎ এমন কেন বললেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একদা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন। আগেও দলের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেটাই চরমে নিয়ে গেলেন। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দিদি আছে বলে আছি, না হলে থাকতে ইচ্ছে করে না। দিদির সঙ্গে কয়েকজন মন্ত্রী থাকেন। যাঁদের হাবভাব দেখলে দলে থাকতে ইচ্ছে করে না।’ তবে সেই মন্ত্রীরা কারা? সেটা খোলসা করে বলেননি কল্যাণবাবু। এই মন্তব্য নিয়ে এখন তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু–সুকান্তর দূরত্বে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত বঙ্গ–বিজেপি, বৈঠকের সম্ভাবনা নয়াদিল্লিতে
কিন্তু সেইসব মন্ত্রী যে দলের বিপদের সময় পাশে থাকে না, সরে যায় সেটা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন এই আইনজীবী–সাংসদ। আর তাই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘দলের খারাপ সময়ে এদের দেখতে পাওয়া যায় না! আরজি কর আন্দোলনের সময় তো কিছু লোক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে গালাগালি করতে উঠে পড়ে লেগেছিল। তখন এই সব মন্ত্রীকে মাঠে দেখা যায়নি। মুখ খুলেছি তো আমি আর কুণাল ঘোষ। আমরা গালাগালিও খেয়েছি। বাকিরা সব চুপ করেছিল।’ কারা চুপ করে ছিল? খোঁজ শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় কারা কারা রয়েছেন সেটা নিয়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসে তো বটেই রাজ্য–রাজনীতিতেও জলঘোলা হচ্ছে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও দলের নেতাদের কাজকর্ম তথা নানা পদক্ষেপ এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। তবে যে ঘটনা তাঁর সঙ্গে নয়াদিল্লিতে ঘটেছে সেই ক্ষোভের আঁচ এবার দলের উপর পড়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে দলের একাংশ সতীর্থকে দল ছেড়ে তারপরে বড় বড় বুলি আওড়ানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন কল্যাণবাবু। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন বা কনফিডেন্ট হারাচ্ছেন তাঁরা দল ছেড়ে দিক। এত বড় বড় কথা মানায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বাদ দিয়ে ভোটে দাঁড়াক, তারপরে দেখব।’