সাজানো হামলার ঘটনা থেকেও যদি নিজেদের রক্ষা না করতে পারেন তবে আপনাদের নিরাপত্তায় রাখা সিআরপিএফ, সিআইএসএফ ও অন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর লজ্জা হওয়া উচিত— জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় এভাবেই বিজেপি–র বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। একইসঙ্গে শুক্রবার তাঁর টুইটে বিজেপি–র কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘টু–বিট’ নেতা বলে কটাক্ষ করেন মহুয়া।
আর তাঁর এই কথার সঙ্গেই উঠে এল ‘দু’পয়সার সংবাদিক’ মন্তব্যের কথা। কারণ, ‘টু–বিট’–এর বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘দু’আনার নেতা’। সাংবাদিকদের পর এভাবেই কি গেরুয়া শিবিরের নেতাদের ‘রেট বেঁধে দিলেন’ মহুয়া মৈত্র? সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিন টুইটে তৃণমূল সাংসদ আরও লিখেছেন, ‘কলেজে BYOB (Bring Your Own Booze) পার্টির কথা শুনেছি। কিন্তু এখন পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই BYOS (Bring Your Own Security) পার্টি করছে বিজেপি। সিআরপিএফ, সিআইএসএফ–সহ যাবতীয় যা সব কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী আছে তা নিয়ে আসছেন বিজেপি–র দু’আনার নেতারা। তারাও সাজানো হামলার ঘটনা থেকে তাঁদের রক্ষা করতে পারছে না। এটা লজ্জাজনক।’
বৃহস্পতিবার বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা চলার পরই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় কেন্দ্র। তার প্রতিক্রিয়ায় টুইট করে জগদীপ ধনখড়কে ‘দিল্লির ভৃত্য’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মহুয়া। আর এবার বিজেপি–র নেতাদের তিনি বললেন ‘দু’আনার নেতা’। কনভয়ে হামলার ঘটনায় বিজেপি যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তা সরাসরি অস্বীকার করেছে ঘটনাটিকে ‘সম্পূর্ণ নাটক’ বলে অভিহিত করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সুরে সুর মিলিয়েই এদিন ঘটনাটিকে ‘সাজানো’ বলে জানালেন মহুয়া।
এদিকে, রাজ্যপালের রিপোর্ট পাওয়ার পর কড়া পদক্ষেপ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ১৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে তলব করা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি–কে। বিজেপি–র সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজ–খবর নিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়কে ফোন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার মধ্যে এ হেন টুইট করে বিজেপি নেতাদের দর ‘দু’আনা’য় বেঁধে দিয়ে মহুয়া মৈত্র পরিস্থিতি আরও জোড়ালো করলেন বলেই মনে করছে রাজ্য রাজনীতির ওয়াকিবহল মহল।