কয়েকদিন আগেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ওএসডি নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে ঘূর্ণিঝড় তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবার তিনি রাজ্য–রাজনীতিতে কার্যত টর্নেডো আছড়ে ফেললেন। ইতিমধ্যেই খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। ১৯৯৬ সালের হাওয়ালা–জৈন কেলেঙ্কারির চার্জশিটে জগদীপ ধনখড়ের নাম ছিল বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই মহুয়া মৈত্রের টর্নেডো৷
ঠিক কী অভিযোগ করেছেন মহুয়া? তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে আবাসনের জমি বরাদ্দের সুবিধেভোগী ছিলেন জগদীপ ধনখড়৷ যদিও পরে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সেই বরাদ্দ খারিজ করে দেয়৷ ট্যুইটে ফের রাজ্যপালকে ‘আঙ্কেলজি’ বলে খোঁচা দিয়ে এই সংক্রান্ত রায়ের প্রতিলিপিও তুলে ধরেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ৷ তাতে আজ রাজ্যপালের রাতের ঘুম উড়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ এখনও এই অভিযোগের কোনও যুৎসই উত্তর খুঁজে পাননি তিনি। ফলে তাঁর পক্ষ থেকে কোনও টুইটও আসেনি।
মঙ্গলবার মহুয়ার ট্যুইট নতুন করে অস্বস্তি বাড়িয়েছে রাজভবনের বাসিন্দার। তাঁর ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘বিশুদ্ধতার প্রতীক পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বেআইনি আবাসন বরাদ্দের সুবিধেভোগী ছিলেন। যেটা পরে বাতিল করে দেয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের ফুলবেঞ্চ৷ এটা কি সাংবিধানিক ছিল, আঙ্কেলজি?’ মহুয়া মৈত্রের পোস্ট করা প্রতিলিপিতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৭ সালের একটি মামলায় রায়দান করেছিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট৷
এই রায়ে বলা হয়েছিল, ডিসক্রিশনারি কোটায় যে জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল তার জন্য আবেদনকারীরা সেই জমি পাওয়ার যোগ্য কি না খতিয়ে দেখা হয়নি৷ ওই জমি পাওয়ার জন্য আবেদনকারী কর্মক্ষেত্রে বিশিষ্ট কেউ কি না, বা দুঃস্থ কি না তার উল্লেখ নেই৷ সেই জমি আবেদনকারীকে দেওয়া যাবে কি না, তার কোনও তদন্ত হয়নি৷ ফরিদাবাদ, গুরগাঁও এবং পাঁচকুল্লার জমিগুলি বহু সাংসদ—হরিয়ানা, বিহার, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, নাগাল্যান্ড, গুজরাত, পাঞ্জাবের নির্বাচিত বিধায়ক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তাঁদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল৷ যাঁদের নামে জমিগুলি বরাদ্দ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে জগদীপ ধনখড়ের নামও রয়েছে৷ আর তা তুলে ধরেছেন মহুয়া মৈত্র।