কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কোন কিছুরই সদুত্তর দেয় না। বিশেষ করে নিজেরা যেসব বিষয়ে বিপাকে পড়ে সেসব নিয়ে প্রশ্ন করলে সদুত্তর মেলে না। ডেটা বা সাম্প্রতিক তথ্য দেওয়া হয় না। এমনকী সেসব বিষয়ে আপডেট হয় না ওয়েবসাইটেও। কৌশলে এড়িয়ে যায় আরটিআইয়ের জবাবও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বয়ানেও পার্থক্য দেখা যায়। এবার এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক ময়দানে নিয়ে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এনডিএ নামের ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের কটাক্ষ, ‘এনডিএ মানে হল—নো ডেটা অ্যাভেলেবল।’
কেন এমনটা করা হল? তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মানুষের প্রায় নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে। রান্নার গ্যাসের দাম হাজার টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। পেট্রল, ডিজেলও অগ্নিমূল্য হয়েছে। সুতরাং সব মিলিয়ে রোজই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গরিব এবং মধ্যবিত্তের পকেট। আর তার জেরে চাপের মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
কোন পথে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস? সূত্রের খবর, আসন্ন পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর শাসনের এই ভয়াবহ দিকগুলি প্রচার করা হবে। নিজেদের করা উন্নয়ন সামনে রেখেও এই বিষয়গুলিকে হাতিয়ার করা হবে। কারণ বিজেপি কোনও উন্নয়নে সামিল না হয়ে সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করতে মরিয়া। তাই পাল্টা এই বিষয়গুলি তুলে ধরা হবে বাংলার মানুষের কাছে। এনডিএ সরকারের আমলে বেকারত্বও সর্বাধিক। ৪৫ বছরের ইতিহাসে যা ভয়াবহ রেকর্ড। আর আছে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের লাগাতার বঞ্চনা। তাই এবার এনডিএ’র ব্যাখ্যা—‘নো ডেটা অ্যাভেলেবল’।
ডেটা নিয়ে ঠিক কী অভিযোগ? তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রে নামেই এনডিএ, আসলে বিজেপি সরকার। যারা কোনও তথ্যই দিচ্ছে না। গত দু’বছরে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ডেটা—জনগণনা, আর্থ–সামাজিক ও জাতিগত জনগণনা, ধর্মীয় ভিত্তিতে জনসংখ্যা, সড়ক সংক্রান্ত পরিসংখ্যান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংক্রান্ত বার্ষিক তথ্য, কৃষি মজুরি, উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত সমীক্ষা, উপভোক্তার ব্যয় সংক্রান্ত সমীক্ষা, মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট, প্রসূতি মৃত্যুর হার, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি, গরিবির পরিমাপ সংক্রান্ত তথ্য–সহ অনেক কিছু উধাও। তাই এমন নামকরণ করা হয়েছে।
ঠিক কী বলছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ? জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় মানুষকে। বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘আমরা চাই, কেন্দ্রের জবাব ও স্বচ্ছতা। এখানেই কেন্দ্রের আচরণ অগণতান্ত্রিক। নরেন্দ্র মোদী একটি ‘ক্লোজড সিস্টেম’ চালাতে চান। যত কম থেকে কম তথ্য দেওয়া যায়, তারই চেষ্টা করছে তাঁর সরকার। কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয় না। বিশেষ করে কর্মসংস্থান, করোনাভাইরাস এবং জাতিগত গণনা সংক্রান্ত তথ্যাদি তারা চেপে যাচ্ছে। এই জমানায় আরটিআই গুরুত্বহীন। অথচ ইউপিএ আমলে একটি ‘ক্রেডিট’ হিসেবে গণ্য হতো।’ ‘উত্তর চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।’ —এমনই এখন তাই প্রচারের কৌশল নেওয়া হয়েছে।