আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে দলবিরোধী মন্তব্য করেছিলেন। তারপর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েই চলেছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ডাক পাননি তিনি। এমনকী দূরত্ব এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে চিঠি লিখে তিনি জানিয়ে ছিলেন, বিরোধী বেঞ্চের শেষ আসনটি তাঁর জন্য বরাদ্দ করা হোক। এই পরিস্থিতি থেকে এবার পাল্টে গেল গোটা পরিস্থিতি। সব ঠিক থাকলে নয়াদিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদের বৈঠকে দেখা যেতে পারে তাঁকে। হ্যাঁ, তিনি রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।
এদিকে রাজ্যসভার সাংসদদের বৈঠকে এবার আমন্ত্রণ পেলেন সুখেন্দুশেখর রায়। আর দলের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে তাঁকে সাহায্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আজ, বুধবার সকালে দলের সাংসদ তথা মুখপাত্র ডেরেক ও’ ব্রায়েন সুখেন্দুশেখর রায়ের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন। আর বিকেলে রাজ্যসভার সাংসদের নিয়ে যে বৈঠক আছে সেখানে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে তাঁকে বলে সূত্রের খবর। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত পোস্ট করেছিলেন সুখেন্দু। তাতেই তাঁর জীবন থেকে সুখ হারিয়ে গিয়েছিল। তখন আঁকে লালবাজারেও তলবও করা হয়েছিল। আর সেই সময় থেকেই দূরত্ব তৈরি হয় সুখেন্দুশেখর রায়ের সঙ্গে দলের।
আরও পড়ুন: টানা ছয় মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল রায়, কী হয়েছে? কেমন আছেন?
অন্যদিকে এতদিনের সাংসদ হয়ে পিছিয়ে থাকতে রাজি ছিলেন না সুখেন্দু। তাই নানা দিক চিন্তা করে সমস্যার সমাধানে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন সুখেন্দুশেখর রায়। কুণাল ঘোষ তাঁকে পরামর্শ দেন, ভুল স্বীকার করে তৃণমূলনেত্রীকে চিঠি লেখার জন্য়। ভুল স্বীকার করলে উনি ক্ষমা করে দেবেন। সেই মতো তৈরি হয় চিঠি। যার শুরুতেই লেখা ছিল, ‘আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।’ তারপর আরও কিছু কথা লেখা ছিল। অতীতের কথাও সেখানে লেখা ছিল বলে সূত্রের খবর। কুণাল ঘোষের পরামর্শ মেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লেখেন সুখেন্দুশেখর রায়। আর তাতেই কমে গেল দূরত্ব।
এছাড়া এখন রাজ্যসভায় আবার আসতে চলেছেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। জহর সরকার যে জায়গা ছেড়ে চলে যান সেখানেই উপনির্বাচন ২০ ডিসেম্বর। এবার সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে ঋতব্রতকে। তাই রাজ্যসভায় নিজের জায়গা ধরে রাখতে চান সুখেন্দু। না হলে পরেরবার তাঁকেও বাদ পড়তে হতে পারে। এই জায়গা থেকেই সুখেন্দুশেখর রায় লেখেন, ‘আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। মেয়ের বাবা হিসেবে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে ব্যথিত ছিলাম। নানা খবরে চোখ রেখে বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। আর এমন হবে না।’